বর্তমানে ধর্মান্ধতা ও উগ্র হিন্দুত্ববাদের প্রসঙ্গ এলেই উত্তরপ্রদেশের নাম সর্বাগ্রে উঠে আসে। যোগীরাজ্যে ফের দেখা গেল হিন্দুত্ববাদীদের দৌরাত্ম্য। এবার তার শিকার হলেন বুকারজয়ী লেখিকা গীতাঞ্জলি শ্রী। সম্প্রতি গীতাঞ্জলি শ্রী তাঁর ‘রেত সমাধি’ উপন্যাসের জন্যে বুকার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই প্রথম কোন হিন্দি ভাষায় লেখা বুকারের মতো সম্মান পেল। ইতিমধ্যেই রেত সমাধি বইটি নিয়েই বিতর্ক শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদীরা।
প্রসঙ্গত, রেত সমাধি উপন্যাসে শিব-পার্বতীকে অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন হাথরাস জেলার বাসিন্দা জনৈক সন্দীপ কুমার পাঠক। টুইটের মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানিয়েছে সন্দীপ। সেই কারণেই ৩০ জুলাই আগ্রায় লেখিকার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজক আগ্রা থিয়েটার ক্লাব এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন রঙ্গলীলার পক্ষ থেকে অনিল শুক্লা জানিয়েছেন, বুকারজয়ী লেখিকা গীতাঞ্জলি শ্রীকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া বিতর্কের কারণেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, লেখিকা নিজেও আসতে চাননি।
এপ্রসঙ্গে অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠনের রামভারত উপাধ্যায় জানান, সন্দীপের দাবি, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে গীতাঞ্জলী দেবী লেখা। লেখিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার জন্যে যোগী এবং উত্তরপ্রদেশের ডিজির উদ্দেশে টুইটও করেছেন সন্দীপ। তাই কতকটা বাধ্য হয়েই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে আয়োজকদের। পুলিশর সূত্রে খবর, এফআইআর আদৌ দায়ের করা হবে কি না, সেই বিষয়ে বইটি পড়ার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। লেখিকার সংবর্ধনা সভা বাতিলকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সারা দেশে নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে। অধিকাংশের মতে, মোদীর আমলে দেশ যে ধর্মান্ধতার করাল আঁধারে ডুবে যাচ্ছে তা একবার ফের স্পষ্ট হল এই ঘটনায়।