কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষক হিসাবে কাজ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন দুই বিএসএফ জওয়ান। মঙ্গলবার বুটেম্বোর ওই শিবিরে ৫০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী আক্রমণ করেছিল। হামলাকারীদের ঠেকাতে গিয়ে এক মরক্কোর জওয়ানও গত হয়েছেন। দুই বিএসএফ জওয়ান হলেন, হেড কনস্টেবল শিশুপাল সিং এবং সানওয়ালা রাম বিষ্ণোই। কঙ্গোলিজ পুলিশ এবং সেনা বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। হামলাকারীরা প্রথমে শান্তিরক্ষীদের দিকে পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে মরক্কোর জওয়ানরা বাতাসে গুলি চালান। অন্যদিকে বিএসএফ কর্মীরা টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেন। কিন্তু ততক্ষণে বুটেম্বোর ওই শিবিরের তিনটি স্থানের পাঁচিল ভেঙে ফেলে হামলাকারীরা। বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঘটনায় শোকবার্তা দিয়েছেন। ভারত বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি সৈন্য প্রদান করে। এই অভিযানগুলিতে, বিশ্বজুড়ে ১৬০ জনেরও বেশি ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছেন, যা কিনা যে কোনও সেনা অবদানকারী দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। কঙ্গোয় বিক্ষোভকারীদের অতর্কিত হামলার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন ২ বিএসএফ জওয়ান। রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষক দলের সদস্য ছিলেন তাঁরা।
বাতাসে গুলি ও টিয়ার গ্যাসের প্রভাবে প্রাথমিকভাবে বিক্ষোভকারীরা কিছুটা পিছিয়ে যায়। কিন্তু অল্প সময় বাদেই তারা দ্বিতীয় আক্রমণের জন্য আবার জড়ো হয়। এমনও খবর পাওয়া গিয়েছে যে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহীরাও ছিল। দ্বিতীয় আক্রমণের সময় ছোট আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। জবাবে, মরক্কো এবং ভারতীয় সেনাও গুলি চালায়। সেই সময়েই শহীদ হন দুই দেশের তিন জওয়ান। গত ২ জুন থেকে বুটেম্বোর এই ক্যাম্পে দু’টি বিএসএফ প্লাতুন মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের অতিরিক্ত শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ভারত বিশ্বজুড়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা মিশনে সবচেয়ে বেশি সৈন্য প্রদান করে। ১৯৫০ সালে কোরিয়ায় রাষ্ট্রপুঞ্জের বহুজাতিক এই বাহিনীতে ভারত অংশগ্রহণ করে। তার পর থেকে, ভারত রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭১টি শান্তিরক্ষা মিশনের মধ্যে ৫১টিতে সৈন্য পাঠিয়েছে। গত কয়েক দশক ধরে এই মিশনে ২,৬৪,০০০-এরও বেশি ভারতীয় সেনা, বিদেশের মাটিতে শান্তি রক্ষার্থে ছুটে গিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের ১৪টি মিশনের মধ্যে ৮টিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনীর ৬,৭০০ জনেরও বেশি কর্মী বর্তমানে এই মিশনে মোতায়েন রয়েছেন।
