বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুললেই বিরোধীদের চুপ করাতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি-পুলিশ লেলিয়ে দেয় বিজেপি। বারবারই এই অভিযোগ করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের বিরোধী নেতা-নেত্রীরা। সেই অভিযোগ যে আদৌ অমূলক নয়, ফের মিলেছে তার প্রমাণ। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে আজ, বুধবার ফের তলব করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই নিয়ে মোট তিনবার তলব করা হল বর্ষীয়ান নেত্রীকে।
এদিন সকাল ১১টায় তিনি ইডির দফতরে পৌঁছন সোনিয়া। তাঁর সঙ্গে যান প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। মায়ের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখেই মায়ের সঙ্গে ইডি দফতরে গিয়েছেন তিনি। প্রবীণ কংগ্রেস নেত্রীকে ইডির লাগাতার জেরাকে তামাশা বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে কংগ্রেস নেতা তথা রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এদিকে ইডি সূত্রে খবর, আজই জেরা শেষ হয়ে যেতে পারে কংগ্রেস নেত্রীর। নতুন করে আর ডাকা হবে না তাঁকে। মঙ্গলবার ইডির দফতরে সোনিয়া গান্ধীর হাজিরা ও কংগ্রেসের বিক্ষোভ ঘিরে যে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, তা মাথায় রেখেই এদিন সকাল থেকেই কড়া পুলিশি ঘেরাটোপে ঘিরে ফেলা হয় কংগ্রেসের সদর দফতর। ইডি দফতরের বাইরেও কড়া পুলিশি নিরাপত্তা বসানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিগত দুইদিন ধরে প্রায় ৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জেরা করা হয়েছে সোনিয়াকে। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় তাঁকে বেআইনি লেনদেন সংক্রান্ত কমপক্ষে ৭০টি প্রশ্ন করা হয়েছে। ঝটপট সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী, তবে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেননি তিনি। বেছে বেছে ৩০টির মতো প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। এদিকে, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর জেরা নিয়ে বিক্ষোভে প্রতিবাদে নেমেছে কংগ্রেস। গত সপ্তাহ থেকেই সংসদে কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ইডির জেরার বিরোধিতা করে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, ‘যেখানে সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি চলছে, সেখানে তিনদিন ধরে কংগ্রেস নেত্রীকে জেরা করে ইডি তামাশা করছে। প্রথমে রাহুল গান্ধীকে পাঁচদিন ধরে জেরা করা হল। এখন সোনিয়া গান্ধীকে তিনদিন ধরে জেরার জন্য তলব করা হচ্ছে। ইডিকে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘ইডি কংগ্রেস পার্টিকে হেনস্থা করছে। আমাদের দলীয় সভাপতি অসুস্থ। কিন্তু তাঁকে বারংবার সমন পাঠানো হচ্ছে। আমরা এইভাবে দমে যাব না। বিগত সাতদিন ধরে আমরা মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদে সরব হচ্ছি। কিন্তু সরকার আমাদের কথা শুনছেন না।’