দেশের ইতিহাস বিকৃতি ঘটলে সমগ্র জাতির জন্য সমূহ বিপদ। এবার এমনই মন্তব্য করলেন ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব। জাতীয় শিক্ষানীতির অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের ইতিহাস পুনর্লিখনের উদ্যোগের বিরুদ্ধে রবিবার সারা ভারত ‘সেভ এডুকেশন’ কমিটির উদ্যোগে এক অনলাইন সেমিনারে হাবিব বলেন, ‘অতীত সম্পর্কে জ্ঞান হবে সুসংহত ও সঠিক। ইতিহাস কেবল শাসক, রাজা, সম্রাটদের নয়, সমাজের উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সাধারণ মানুষেরও।’ তাঁর সংযোজন, ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু তথ্যের ক্ষেত্রে কোনও আপস করা চলে না।
হাবিবের মতে, ইচ্ছামতো কোনও ঘটনাকে ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়া যায় না। পাকিস্তান তাদের দেশে ইতিহাস শুরু করেছে মহম্মদ বিন কাসেমের সময় থেকে, যাঁর দ্বারা ঐস্লামিক সিন্ধ প্রদেশের জন্ম হয়েছিল। ভারতের ইতিহাসে পাকিস্তানের ছায়া পড়ছে। কারণ, বর্তমান শাসকেরা মুছে দিয়েছেন সম্রাট আকবরের নাম, ধর্মের ক্ষেত্রে যিনি ছিলেন উদার। বলা হচ্ছে, জাতপাতের ইতিহাস নাকি মুসলিম রাজত্ব থেকে শুরু হয়েছিল। কেন্দ্রের বর্তমান শাসকেরা রামায়ণ, মহাভারতকে ইতিহাস হিসাবে দেখাতে চাইছেন। এগুলি ইতিহাসের চরম বিকৃতি বলে জানান হাবিব।
অন্যদিকে, আইআইটি বম্বের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রাম পুনিয়ানী বলেন, ‘অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময় থেকেই ইতিহাসের গৈরিকীকরণ চলছে। রাজত্ব বিস্তারের জন্য হিন্দু রাজা ও মুসলমান রাজা যুদ্ধ করেছেন, প্রথম জনকে বলা হচ্ছে জাতীয়তাবাদী আর দ্বিতীয় জনের গায়ে লাগানো হচ্ছে আক্রমণকারীর তকমা। এটা ইতিহাসের পরিকল্পিত বিকৃতিকরণ।’ চেন্নাই বিবেকানন্দ কলেজের ইতিহাসের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এ করুণানন্দন বলেন, ‘ইতিহাস রচনা করবেন ইতিহাসবিদেরা, সরকারি দফতর নয়। অথচ এই দেশে এখন সেটাই হচ্ছে।’