রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর জয় প্রত্যাশিতই ছিল। হয়েছেও তাই। শীঘ্রই দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি পদে শপথ নেবেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনিই দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি। দ্রৌপদীর জন্ম ১৯৫৮ সালের ২০ জুন উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে। ২০০৬ সালে উড়িষ্যার জঙ্গলের মানুষদের প্রতিবাদ আন্দোলনে পুলিশের গুলি চলে। ভয়াবহ সেই ঘটা একুশ শতকের কলিঙ্গযুদ্ধ নামে বিশেষ আলোচিত। কারণ গুলিবিদ্ধ হয়ে আদিবাসীদের মৃত্যু হয়েছিল কলিঙ্গ নগর জেলায়। এই ঘটনার পর নীরব থাকার অভিযোগ বারবার তাড়া করেছে দ্রৌপদীকে। এমনকি তিনি যখন ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল তখনও সেখানকার আদিবাসী জনজীবনে কলিঙ্গ নগর সংঘর্ষের পর দ্রৌপদীর নীরবতা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল। ঝাড়খন্ডের তৎকালীন বিজেপি সরকার সেই ক্ষোভ চাপা দেয়।
ইতিহাসে কলিঙ্গ যুদ্ধ বহুল আলোচিত। এই যুদ্ধে অগনিত মানুষের মৃত্যুর জেরে মৌর্য সম্রাট অশোকের আমুল পরিবর্তন হয়। আর একুশ শতকের কলিঙ্গ নগরে আদিবাসীদের রক্তাক্ত দেহ দেখে নীরব থেকে যান আদিবাসী বিজেপি রাজনীতিক দ্রৌপদী মুর্মু। এই কলিঙ্গ নগরে ‘আদিবাসী গণহত্যা’র পিছনে আছে শিল্পের জন্য উড়িষ্যা সরকারের জমি দেওয়া ও তার প্রতিবাদে বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতৃত্বে আদিবাসীদের প্রতিবাদ। ২০০৬ সালে সালের ২ রা জানুয়ারি টাটা সংস্থার প্রতিনিধিরা পুলিশ বাহিনী ও প্রশাসনিক কর্তাদের নিয়ে জমির অধিগ্রহণ করতে এলেই সংঘর্ষ ছড়ায়। ১৫ টি গ্রামের চারশোর বেশি আদিবাসী মানুষ তীর ধনুক নিয়ে রুখে দাঁড়ান। পুলিশ গুলিতে কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপরই বিতর্কে জড়ায় উড়িষ্যার বিজেডি-বিজেপি জোট সরকার। কেন দ্রৌপদী মুর্মু নীরব সেই প্রশ্নে বিতর্ক উস্কে ওঠে। তবে তিনি নীরবই থেকে যান। সেই দ্রৌপদীই ২৫ জুলাই তিনি দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা হিসেবে রাষ্ট্রপতি পদে বসবেন।