বিগত দু’বছর করোনা মহামারীর জেরে ভার্চুয়ালি শহিদ দিবস পালন করেছিল তৃণমূল। ফলে ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের বিপুল জনসমাগম দেখা যায়নি। কিন্তু চলতি বছরে সংক্রমণ আয়ত্তে থাকায় আগের মতোই ফের বিশাল জনসমাগমের সঙ্গে শহিদ দিবস পালন করছে ঘাসফুল শিবির। এবার বৃষ্টি মাথায় নিয়েই একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ কাঁপিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে তীব্র আক্রমণের পাশাপাশি নাম না করে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারীকেও বিঁধলেন তিনি।
এদিন তিনি বলেন, একুশে জুলাইয়ের সর্বকালীন রেকর্ড আজ ছাপিয়ে গিয়েছে। ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সাত বছর যুব সভাপতি ছিলাম, এই উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা আমি দেখিনি। বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় আটকে রয়েছেন। তাঁরা এখানে পৌঁছতে পারেননি। বৃষ্টি আমাদের জন্য শুভ। বৃষ্টি যখন হয়েছে বিরোধীরা ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছে। আজ থেকে দেড় বছর আগে, যখন গেল গেল রব তুলেছিল, তৃণমূল ক্ষমতায় আসবে না, বিজেপি ২০০-র বেশি আসন নিয়ে সরকার গড়বে। কিন্তু আপনারা জীবন পণ লড়াই করেছেন। সুতরাং অভিনন্দন আপনাদের প্রাপ্য।’
অভিষেক জানান, আগামী দিনের লড়াই শুধু পঞ্চায়েত ভোটের লড়াই নয়, আগামী দিনে দিল্লিতে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য লড়াই হবে। আজকের একুশে নতুন করে শপথ নিতে হবে, তৃণমূল করতে গেলে মানুষকে প্রাধান্য দিতে হবে। নিজে করে খাওয়ার জন্য তৃণমূল নয়। তৃণমূল করতে গেলে দলীয় অনুশাসন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাধারা মেনে চলতে হবে। হয় ঠিকাদারি করবেন, নইলে তৃণমূল করবেন। তৃণমূল করতে গেলে নিঃস্বার্থ ভাবে করতে হবে। আজকের তৃণমূল অন্য তৃণমূল। এই তৃণমূলে গদ্দাররা নেই, এই তৃণমূলে মীরজাফররা নেই। এই তৃণমূল বিশুদ্ধ লোহার মতো। দলবদলু শুভেন্দুদের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘দু’ একটা চার আনার নকুলদানাকে নিয়ে গিয়ে ভেবেছিল তৃণমূলকে বাংলা ছাড়া করব৷ ২০১৬ সালে তৃণমূল পেয়েছিল ২১১ আসন, আর ২০২১-এ ভাঙা পায়ে লড়াই করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ২১৪ আসনে জিতে দেখিয়েছেন৷’
অভিষেকের কথায়, ‘তৃণমূল আমাকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি তৃণমূলের মতাদর্শকে পাথেয় করে অন্য রাজ্যে দলের প্রসারের চেষ্টা করে যাচ্ছি। যারা হেরে গিয়ে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে, বলেছিল আব কি বার দুশ পার, তারা এখন চলতে পারছে না। মুখ থুবড়ে পড়ছে। আগামী দিনে পঞ্চায়েত ভোট হবে। যোগ্য প্রার্থীকে সুযোগ দিয়ে তৃণমূল মাঠে নামবে। যদি কেউ ভাবে দাদার জলের বোতল বয়ে প্রার্থী হব, এর ওর কাছের হয়ে পঞ্চায়েতের প্রার্থী হব, তা হলে ভুল ভাবছেন। মানুষ যদি সার্টিফিকেট দেয় তবেই প্রার্থী হবেন। নইলে যত বড় নেতার ছত্রছায়ায় থাকুন, টিকিট পাবেন না। একুশের মঞ্চ থেকে এদিন বিজেপিকেও প্রবল আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, বিজেপি নেতারা বলছেন মোদীজিকে বলে বাংলার টাকা বন্ধ করে দিয়েছি। ভাল করেছেন। আমি আপনাদের বলছি, বাংলা ভিক্ষা চাইবে না। কারণ আমরা অন্য দলের মতো আত্মসমর্পণ করব না।