রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা যে আগের চেয়ে অনেকটাই উন্নত হয়েছে, তা প্রায় সকলেই একবাক্যে স্বীকার করেন। আর গোটা রাজ্যের মধ্যে পিজিতে যে বর্তমানে উন্নতমানের চিকিৎসা চলছে, সেই খবর ছড়িয়ে গেছে দেশজুড়েই। একের পর এক নজির গড়ছেন চিকিৎসকরা। আবারও তেমনই এক মিরাকেল করল পিজি। ছোট থেকেই সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত ছিল মেয়েটি। দক্ষিণ ভারতের সেরা সেরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে, বড় বড় হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও লাভের লাভ হয়নি। অবশেষে সেই শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে তুলল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল। যা দেখে সেই খুদের বাবা চন্দ্রমৌলির চোখে তখন আনন্দের কান্না। প্রায় ১০০টি বেশি দক্ষিণি সিনেমা এবং অ্যাড ফিল্মে ডাবিং শিল্পী ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করেছেন এস চন্দ্রমৌলি। তাঁরা চেন্নাইয়ের বাসিন্দা। জন্ম থেকেই তাঁর মেয়ে গীতশ্রী সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত।
চন্দ্রমৌলি বলছিলেন, ‘ও দাঁড়াতে, বসতে পারত না। কথা বলতেও পারে না। কিন্তু সব বোঝে। ভালোবাসা, রাগ, দুঃখ সব। দক্ষিণ ভারতের বড় বড় ডাক্তার ও হাসপাতালে চেকআপ করিয়েছি। লাভের লাভ কিছুই হয়নি। কিন্তু কলকাতায় এসে কপাল খুলল। পিজির ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসায় আমাদের শয্যাশায়ী মেয়ে এই প্রথমবার উঠে বসল।’ চন্দ্রমৌলির স্ত্রী পেশায় ভারতনাট্টম শিল্পী বৈশাখী চক্রবর্তী। কলকাতারই বাঘাযতীনে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। গত শুক্রবার থেকে এসএসকেএম-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তার রাজেশ প্রামাণিকের অধীনে চিকিৎসা চলছিল গীতশ্রীর। সোমবার ছুটি হয়ে গিয়েছে এই শিশুটির। এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ডক্টর রাজেশ প্রামাণিক জানান, ‘বিশেষ ধরনের সেরিব্রাল পলসিতে আক্রান্ত মেয়েটি। দুশ্চিন্তার কিছু নেই। একটু সময় দিলে নিশ্চয়ই হাঁটতে পারবে ও। কথা বলার জন্য নিয়মিত স্পিচ থেরাপি করাতে হবে। দক্ষিণে এত ভাল চিকিৎসাব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও ওঁরা যে কলকাতায় এসে আমাদের হাসপাতালের উপর ভরসা করলেন, এটাই বড় পাওয়া।’