বঙ্গ রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের ইঙ্গিত। রবিবারই উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ায় বাংলার রাজ্যপালের পদ থেকে রবিবার ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনকর। তাঁর জায়গায় অস্থায়ী রাজ্যপাল হিসাবে মণিপুরের রাজ্যপাল লা গণেশনের নাম ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।হরবিবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, “বাংলার রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। তাঁর সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি। এখন থেকে নিজের দায়িত্ব ছাড়াও বাংলার রাজ্যপাল পদের দায়িত্ব পালন করবেন মণিপুরের রাজ্যপাল লা গণেশন।” উল্লেখ্য, আরএসএসের দীর্ঘদিনের প্রচারক। পরে তামিলনাড়ুর বিজেপির সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এর পরে তিনি সর্বভারতীয় বিজেপির সহ-সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন। বিজেপি তাঁকে রাজ্যসভায়ও পাঠায়। ২০২১ সালের ২২শে আগস্ট তিনি মণিপুরের রাজ্যপাল হিসেবে নিযুক্ত হন।
স্বাভাবিকভাবেই, গণেশনকে বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্বে দেওয়ার পর থেকেই একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে। জগদীপ ধনকর এবং রাজ্য সরকারের বিরোধ চরমে পৌঁছেছিল। নানান ইস্যুতে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের সম্পর্ক তিক্ত থেকে তিক্ততর হয়েছে। রাজ্যের শাসক দল তো বটেই এমনি সিপিআইএম, প্রদেশ কংগ্রেসের তরফেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ করা হয়েছে, জগদীপ ধনকরের আমলে রাজভবন কার্যত বিজেপি’র দলীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এরপর গণেশন রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার কোনও সম্ভবনাই দেখা যাচ্ছে না। বরং বিরোধ আরও মাথাচাড়া দিতে পারে বলেই অনুমান করছেন অনেকে। কট্টর আরএস কর্মী গণেশন বিজেপি-আরএসএসের অ্যাজেন্ডাগুলোকেই বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবেন। বাংলা দখলের জন্য বিজেপি-আরএসএস বারবার সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে ব্যবহার করতে চাইছে। বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে। এবং তার ফায়দা ভোট যন্ত্রে প্রতিফলিত করতে চাইছে। পৃথক উত্তরবঙ্গের কথা বলে বাংলা ভাগের কৌশল নিয়েছে। এই সব বিষয়ে লা গণেশন রাজ্যপাল হিসেবে বিজেপি-আরএসএসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন বলেই অনুমান রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, জগদীপ ধনকরের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে বিজেপির হয়ে ব্যাটিং করতে দেখা যেতে পারে বাংলার নব নিযুক্ত রাজ্যপাল লা গণেশনকে। যার বড়সড় প্রভাব পড়বে রাজনীতির আঙিনায়।