এককথায় মমতা-অন্তপ্রাণ তিনি। বয়সে মমতার চেয়ে প্রায় ৩০ বছরের বড় হাওড়ার গীতা মজুমদার। তৃণমূলই ধ্যানজ্ঞান ৯০ বছরের গীতাদেবীর। এই বয়সে আর ঘরে বসে থাকতে চান না তিনি। জীবনে যে ক’টি দিন বেঁচে আছেন, সেই কটি দিনও তৃণমূলের পতাকা হাতে মমতার জন্য প্রচার চালিয়ে যেতে যান গীতাদেবী। কোভিডের ভয় কাটিয়ে জোড়াফুলের ঝান্ডা হাতে হাওড়া শহরের সালকিয়া এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসছেন একটাই কথা – “মমতা মোদের দিয়েছে ডাক, ২১শে জুলাই বাম-বিজেপি নিপাত যাক।” দলে দলে সবাই যাতে একুশে জুলাইয়ের সভায় আসেন তার জন্য দোরে দোরে গিয়ে দরজার কড়া নেড়ে সবাইকে বলছেন গীতাদেবী। তিনিই এখন হাওড়া শহরে তৃণমূলের অন্দরে নতুন অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। হাওড়ার সালকিয়া বি রোডের বাসিন্দা গীতা মজুমদার। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দলের হয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন তিনি। মমতাও চেনেন গীতাদেবীকে। জীবনের একটা বড় সময় পাশে থাকায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হাওড়া শহরে গিয়ে দেখা করেছিলেন গীতার সঙ্গে। আবার মমতার মাতৃবিয়োগের খবর পেয়ে এই ছুটে গিয়েছিলেন মমতার কাছে। কালীঘাটে তাঁর বাড়িতে গিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর।
উল্লেখ্য, ৯০ বছর বয়সেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি একইরকম আনুগত্য গীতাদেবীর। আনুগত্য দলের প্রতিও। তাই তো কোভিডের ভয় কাটিয়ে এই বছরও তিনি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়ে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য জর প্রচার করছেন। তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে বাড়ি বাড়ি মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন মমতার বার্তা নিয়ে। মিছিল করছেন, দেওয়াল লিখনেও এগিয়ে আসছেন। বয়সের কাছে হার না মেনে গীতাদেবী প্রতি সপ্তাহে একদিন করে তৃণমূলের হাওড়া সদরের কার্যালয়ে গিয়ে মহিলা সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। দলের সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রতি বছরের মতো এবারও ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দেবেন তিনি। মাঝের দু’টি বছর তাঁকে ঘরে বসে একুশে জুলাই কাটাতে হয়েছে। এবারে সুদে আসলে পুষিয়ে নিচ্ছেন। প্রতিদিন সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়ছেন। চলছে একুশে জুলাইয়ের সমর্থনে মিছিল, মিটিং, দেওয়াল লিখনের পর্ব। সবাই অবাক হয়ে এটাই ভাবছেন, এই বয়সেও এত এনার্জি কোথা থেকে পাচ্ছেন তিনি? “এটাই মমতা নামের ম্যাজিক”, মুচকি হেসে জবাব দিলেন তিনি।