চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির কথা অজানা নয় কারুর। বিরল থেকে বিরলতর রোগ সারিয়ে তুলছেন চিকিৎসকরা। প্রাণ ফিরিয়ে দিচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষের। তেমনই আরও একবার নজির গড়ল সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকরা। বিরল অস্ত্রোপচার করে যুবকের ভাঙা মেরুদণ্ড জুড়ে দিলেন পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। অর্থোপেডিক অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসার কৃষ্ণ প্রসাদ সর্দারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হাসপাতালের মুকুটে জুড়ল নতুন পালক।
কিছুদিন আগেই গাছ থেকে পড়ে যান পুরুলিয়ার টামনা থানার ভুরষা গ্রামের বাসিন্দা রামনাথ হেমব্রম। ৩৫ বছর বয়সি ওই যুবকের শিরদাঁড়ার হাড় ভেঙে যায়। আস্তে আস্তে পঙ্গু হয়ে যেতে শুরু করেন তিনি। একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় হাঁটাচলা। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জুড়তে হবে মেরুদণ্ডের ভাঙা হাড়। রামনাথের পরিবার অত্যন্ত দুঃস্থ। তাঁরা জানান, এত টাকা খরচ করে অস্ত্রোপচার করার সামর্থ্য তাঁদের নেই। এরপরেই হাল ধরেন দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের অস্থি বিশেষজ্ঞ ডঃ কৃষ্ণ প্রসাদ সর্দার।
তিনি হাপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেন, ওই হাসপাতালেই রামনাথের অস্ত্রোপচার করার। হাসপাতালের তরফে সবুজ সংকেত পেতেই শুরু হয় তোড়জোড়। কলকাতা থেকে আনানো হয় চিকিৎসার সরঞ্জাম। অস্ত্রোপচারের আগে দু’ সপ্তাহ ওই হাসপাতালেই পর্যবেক্ষণে রাখা হয় রোগীকে। ডঃ কৃষ্ণ প্রসাদ সর্দারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ডঃ কুলদীপ মুখার্জি, ডঃ ফাগুরাম মাঝি, ডঃ জয়দীপ কর্মকার, ডঃ কুন্তল মালিক ও ডঃ অজিত প্রসাদ মুর্মু ছাড়াও দলে ছিলেন কয়েকজন নার্স, জিডিএ ও গ্রুপ ডি কর্মীরা। দীর্ঘ এবং জটিল অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, রোগী পা নাড়াতে পারছেন। এই প্রথম নয়, এর আগেও ডঃ কৃষ্ণ প্রসাদ সর্দারের নেতৃত্বে সফলভাবে জটিল অস্ত্রোপচার করে সাফল্য পেয়েছে পুরু;ইয়ার এই সরকারি হাসপাতাল। এর আগে বিরল সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন ৪৫ বছর বয়সি কনস্টেবল গোপাল চন্দ্র দাস। হামাগুরু দিয়ে হাসপাতালে ঢুকলেও সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলেন তিনি। রামনাথ হেমব্রমের চিকিৎসার সাফল্যে ট্যান্ট খুশি হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডঃ পীত বরণ চক্রবর্তী।