কয়েকদিন আগেই এনজেপি-আলিপুরদুয়ার ভিস্তাডোম কোচ শুরু করেছে রেল। পর্যটকদের কাছে সুন্দরী ডুয়ার্সের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলে ধরতে ছাদ ও দুদিকে কাচ দিয়ে ঘেরা এই ট্রেন চালু করা হয়েছে। কিন্তু রেলের পরিকল্পনার অভাবেই মুখ থুবড়ে পড়েছে ভিস্তাডোম। যাত্রীরাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ভিস্তাডোম থেকে। বাতানুকূল কোচে রিভলভিং চেয়ারে বসে এনজেপি থেকে আলিপুরদুয়ার যেতে যেতে, ডুয়ার্সের পাহাড়, জঙ্গল, চা বাগান, হাতি, হরিণ দেখাতেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না পর্যটকরা। কোনভাবেই ভিস্তাডোমে যাত্রী হচ্ছে না। ট্রেনে একটি মাত্র ভিস্তাডোম কোচ রয়েছে, যেখানে ৩৬টি আসন রয়েছে। প্রতিটি আসনের ভাড়া ৯০০ টাকা। এছাড়াও ট্রেনে দুটি এসি চেয়ারকার এবং দুটি নন-এসি চেয়ারকার কোচ থাকে। প্রতি সপ্তাহে শনি ও রবিবার এনজেপি থেকে আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশ্যে সকাল ৭টা ২০তে ট্রেনটি ছাড়ে। আর এনজেপিগামী ট্রেনটি দুপুর দুটোয় রওনা হয়। কিন্তু যাত্রী সংখ্যা একেবারেই তলানিতে, ভিস্তাডোম কোচের যাত্রী সংখ্যা হতাশাজনক। সংখ্যাতত্ত্ব বলছে, এনজেপি থেকে আলিপুরদুয়ার যাওয়া ক্ষেত্রে কোচের ২৬ শতাংশ আসন ভর্তি হচ্ছে। ফেরার সময় অবস্থা খানিকটা ভাল।
প্রসঙ্গত, করোনার প্রকোপ কাটার পর ফের মানুষ পর্যটকমুখী। চলতি বছরে ডুয়ার্সে পর্যটকের ঢল নেমেছিল, অন্যান্য বছরের তুলনায় রেকর্ড। ভিড় বাড়লেও ভিস্তাডোমে উঠেছেন না যাত্রীরা। এর কারণ হিসেবে রেলের পরিকল্পনার অভাবকেই কাঠগোড়ায় তুলছেন ওয়াকিবহাল মহল। পর্যটন শিল্পে যুক্ত ব্যবসায়ীরা রেলের কাছে ট্রেনের সময় বদলানোর জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তাদের দাবি ছিল, এনজেপি থেকে ট্রেনটি সকাল ৯- ৯:৩০-এর মধ্যে ছাড়া হোক। ব্যবসায়ীরা পরিষ্কার জানিয়েছেন, সকাল ৯টার আগে ট্রেন চললে পর্যটকদের পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ পর্যটকই পদাতিক এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেলে এনজেপি এসে পৌঁছন, যা ওই সময় এসে পৌঁছয় না। পর্যটকদের আসার আগেই ভিস্তাডোম ছেড়ে যায়। ফলে পর্যটকদের ভিস্তাডোম কোচের ট্রেন ধরার সুযোগ থাকে না। পর্যটকেরা কলকাতা থেকে যখন এনজেপিতে এসে পৌঁছচ্ছেন, তার আগে প্রতিদিনই ট্রেনটি আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। ভিস্তাডোম কোচে সওয়ার হতে গেলে পর্যটকদের একদিনের শিলিগুড়িতে অপেক্ষা করতে হবে, সেক্ষেত্রে খরচ বাড়বে। বেড়াতে বেরিয়েই পর্যটকেরা বৃথা একটি দিন নষ্ট করতে চান না। ফলে যাত্রীরা ভিস্তাডোম কোচ বিমুখ হয়ে পড়েছেন। সমালোচনার মুখে রেল।
