রথ এবং উল্টোরথ দুই মিটেছে। এই মুহুর্তে বিতর্কের কেন্দ্রে পুরীর মন্দিরের নীচে গুপ্তধন আকারে লোহার সিন্ধুকে রাখা প্রায় ১০০ কোটির বেশি মূল্যের হীরে, জহরত ও স্বর্ণালঙ্কার। ২০১৪ সালে নীলমাধবের নবকলেবর থেকে রথযাত্রা ঘিরে যে বিতর্ক শুরু তা এবার একেবারে শেষপর্বে এসে আছড়ে পড়ল রবিবারের সোনাবেশের দিন। পুরীর মন্দিরের প্রধান দৈত্যাপতি সোয়াইন জগন্নাথ প্রশ্ন তুলেছেন, গুপ্ত ভাণ্ডারে বিচিত্র ধরণের অলঙ্কার এবং হীরে জহরত থাকা সত্ত্বেও কেন একই গয়না প্রতিবছর দেবতাকে পরানো হচ্ছে? কেন বছরের পর বছর ভক্তদের তরফে যে অজস্র মনিমুক্তা এবং মূল্যবান অলংকার দেবতার উদ্দেশ্যে মন্দিরে প্রণামী হিসাবে জমা পড়ছে তা কেন প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না? মূলত জগন্নাথ দৈত্যাপতির এই প্রশ্নের ধাক্কায় সোনাবেশ দেখতে আসা ভক্তদের মুখে মুখে নতুন করে মন্দিরের গুপ্তধন ভাণ্ডারের সম্পদ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এমনকী প্রায় দু’দশকের বেশি পুরীতে সোনাবেশ দেখতে আসা জগন্নাথভক্ত কলকাতার ডেপুটি মেয়র ও বিধায়ক অতীন ঘোষও স্বীকার করেন, বিগ্রহের অলঙ্কারে কোনও পরিবর্তন নেই। শুনেছি, মন্দিরের নিচে দেবতার জন্য প্রাচীন রাজাদের দান করা কয়েক’শো বছরের পুরানো অলঙ্কার আছে। কিন্তু তা কোনওবার দেখতে পেলাম না। উলটোরথের পরদিন অর্থাৎ রবিবার ছিল সোনাবেশ। ছুটির দিন থাকায় পুরী কার্যত জনসমুদ্র নগরী। সমুদ্রের সৈকত থেকে রাজপথ, নিউ পুরী, ভুবনেশ্বরমুখী রাস্তা যেদিক দিয়েই শহরে পা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে শুধুই মানুষের মাথা দেখা গিয়েছে। পুরীর জেলাশাসক সামান ভার্মা নন্দীঘোষ রথের উলটোদিকে দাঁড়িয়ে স্বীকার করলেন, পরপর দু’বছর ভক্তরা আসতে পারেননি তাই এবছর একটু বেশি ভিড়। অন্যবার বিকেল চারটার পর সোনাবেশ শুরু হয় , এবার দুপুর দু’টো থেকে ভক্তদের ঢল নেমেছিল। কিন্তু তাতেও মধ্যরাতেও সমান জনস্রোত ছিল পুরীর মন্দিরের সিংহদুয়ারমুখী। আর সেই ভিড়ে বাংলার পাশাপাশি ছিলেন বিভিন্ন প্রদেশের হাজার হাজার মানুষ। সবাই তিন দেবতার অপূর্ব রাজবেশ দেখে মুগ্ধ।