বিজেপির সঙ্গে সখ্যতার প্রশ্নই নেই, সাফ জানালেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তাঁর কথায়, ‘ওঁরা আমার পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে। ওঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসার সুযোগ আর নেই’। মোটের উপর এই মুহূর্তে সরকার খাদের কিনারায় এসে দাঁড়ালেও পদ্ম-সখ্যতায় ঘোরতর আপত্তি বালাসাহেব পুত্র উদ্ধবের।
মহারাষ্ট্রে মহা সংকট। নজিরবিহীন রাজনৈতিক সংকটের মুখে উদ্ধব ঠাকরে নেতৃত্বাধীন মহা বিকাশ আঘাড়ি জোট। বিরোধী একনাথ শিন্ডে ক্রমেই দল ভাঙিয়ে শক্তি বাড়াচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, এবার শিবসেনার প্রতীক ও নাম চেয়ে নাকি নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ারও পরিকল্পনা করেছে শিন্ডে শিবির। রাজ্যে এখনই অন্তর্বর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে উদ্ধব বলেন, ‘‘আজই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হোক। দেখা যাবে মানুষ কাকে কাছে টেনে নেন।’’ মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে একনাথ শিন্ডে সরকার তৈরি করার পর প্রথম বার প্রকাশ্যে এলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। অন্তর্বর্তীকালীন ভোট করানোর দাবি তুলে তিনি দাবি করলেন, কারও ক্ষমতা নেই শিবসেনার প্রতীক ছিনিয়ে নেওয়ার। ক্ষমতা হারানোর পর প্রথম বার প্রকাশ্যে এসেই অন্তর্বর্তী নির্বাচনের দাবি জানালেন বালাসাহেব পুত্র। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওঁদের চ্যালেঞ্জ করছি, আজই বিধানসভা ভোট করুন। আমরা যদি ভুল কিছু করে থাকি, মানুষ আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন। আর আপনাদের যদি এটাই উদ্দেশ্য ছিল, তা হলে আড়াই বছর আগেই এটা করলেন না কেন? তা হলে আজ এই সব তামাশার কোনও প্রয়োজন হত না।’’
মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথের পরই শিন্ডে শিবির সরাসরি উদ্ধব-সেনার সংগঠনে হাত দিয়েছে। প্রায় প্রতি দিনই শিবসেনার উদ্ধব শিবিরে ভাঙনের খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি শিবসেনার তির-ধনুক প্রতীকও হাতছাড়া হবে মাতশ্রীর? এই জল্পনার কড়া জবাব দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। উদ্ধব বলেন, ‘‘শিবসেনার প্রতীক আমাদের কাছ থেকে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না। তির-ধনুকই আমাদের দলের নির্বাচনী প্রতীক চিহ্ন থাকবে।’’ তার পরই সরাসরি শিন্ডেকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে আমাদের থেকে শিবসেনার প্রতীক ছিনিয়ে নিয়ে দেখান।’’ আগামী ১১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে মহারাষ্ট্র মামলার গুরুত্বপূর্ণ শুনানি। সে দিনের কথা মনে করিয়ে উদ্ধব বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের ১১ জুলাইয়ের রায় শুধু শিবসেনা নয়, ভারতীয় গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ স্থির করে দেবে।’’ যে কয়েক জন বিধায়ক শেষ পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে উদ্ধব বলেন, ‘‘আমি ১৫-১৬ জন বিধায়ক, যাঁরা সমস্ত হুমকি উপেক্ষা করেও আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের জন্য গর্ববোধ করি। এই দেশ টিকে আছে সত্যমেব জয়তের উপর, অসত্যমেব জয়তের এখানে কোনও জায়গা নেই।’’