আবার সারা দেশে এগিয়ে বাংলা। পুরো ভারতে এখনও অবধি যা চালু হয়নি, সেটাই এবার এ রাজ্যে চালু করতে লেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় থাকা রাজ্যের সব মানুষের জন্য এবার তৈরি হচ্ছে ১৪ সংখ্যার বিশেষ আইডি নম্বর। সেই নম্বর থেকেই জানা যাবে সংশ্লীষ্ট ব্যক্তি বা মহিলার শরীরে কী কী সমস্যা রয়েছে, তিনি রাজ্যের কোন হাসপাতালের অধীনে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে কোন কোন চিকিৎসা করিয়েছেন, কোন কোন চিকিৎসক তাঁকে দেখেছেন এবং তাঁরা কোন কোন ওষুধ তাঁকে দিয়েছেন। অর্থাৎ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে থাকা একজন মানুষের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব তথ্যই পাওয়া যাবে এই ১৪ সংখ্যার আইডি নম্বর থেকে। আর এই নম্বর এবার হয়ে উঠতে চলেছে সেই মানুষটির পরিচয়। তাঁকে এই নম্বর দেখেই চিনবে সরকারি হাসপাতাল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে আসা কয়েক কোটি রোগীর জন্য এবার থেকে চালু হচ্ছে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা ইউআইডি। আধার কার্ড ও মোবাইল নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এলেই তৈরি হয়ে যাবে প্রত্যেক রোগীর নিজস্ব ১৪ সংখ্যার ইউনিক নম্বর। তবে এই বিষয়টি এখন পরীক্ষামূলক স্তরে থাকায় নম্বর তৈরির ক্ষেত্রে রোগীর অনুমতি নেওয়া হচ্ছে। পরে যখন রাজ্যজুড়ে এই অবস্থা চালু হয়ে যাবে তখন আর অনুমতি নেওয়া হবে না। প্রত্যেক রোগীর জন্য তৈরি হবে আলাদা আলাদা নম্বর। আর সেই নম্বর দিয়েই শুধু যে সেই রোগীকে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যাবে তাই নয়, সেই নম্বর দিয়েই মিলবে তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যও।
পাশাপাশি, যে কোনও প্রয়োজনে যে কোনও সরকারি হাসপাতালে গিয়ে ইউনিক নম্বরটি দিলেই আউটডোর, ইমার্জেন্সি, ইন্ডোর- যে কোনও জায়গাতেই চিকিৎসক পেয়ে যাবেন রোগীর আগের চিকিৎসার সব তথ্য। এখন রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে অনলাইনে আউটডোর টিকিট করতে গেলে চাওয়া হচ্ছে আধার কার্ড নম্বর। তা দিলেই ওটিপি’র মাধ্যমে তৈরি হয়ে যাচ্ছে ইউআইডি। পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রত্যেক জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের ইউআইডি প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে বলেছে স্বাস্থ্যভবন। সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রকল্পটি আসলে ন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ মিশনের অন্তর্গত। তবে দেশের মধ্যে বাংলাই সব থেকে বেশি এগিয়ে রয়েছে এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে। তবে এই নম্বর শুধু শুধু বাংলার ক্ষেত্রেই নয়, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, ভবিষ্যতে দেশের যে কোনও সরকারি হাসপাতালে রোগীর পরিচয় হবে ওই ১৪ সংখ্যার ইউআইডি। এর ফলে রাজ্যের বা দেশের যে কোনও সরকারি হাসপাতাল বা মেডিকেল কলেজের আউটডোর, ইমার্জেন্সি বা ইন্ডোরে ডাক্তার দেখাতে বা ভর্তি হতে কোনও অসুবিধাই হবে না। চিকিৎসা সংক্রান্ত পুরনো কাগজপত্রও বয়ে বেড়াতে হবে না। ইউনিক আইডি জানালেই হবে। রোগীর অসুখ ও তার চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত প্রেসক্রিপশন, রোগ ও যাবতীয় পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে নিমেষেই। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারের এহেন পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।