আগামী দিন একেবারেই মসৃণ নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে অন্ধকার সময় নেমে আসতে চলেছে। ফের প্রবল আর্থিক মন্দার দিকে এগোচ্ছে পৃথিবী। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, বিশ্বব্যাপী মন্দার ফলে মুদ্রাস্ফীতির হার শিখর ছোঁবে। বিশ্বের সব দেশেই আরও বাড়বে জিনিসপত্রের দাম। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। যা সামাল দিতে বাড়াতে হবে সুদের হার। গত এপ্রিল থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিপদের ছায়া পড়েছে বলে আইএমএফের সাম্প্রতিকতম পরিসংখ্যানে ধরা পড়েছে। যে কারণে ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা আগামী বছরে ফের বিশ্বব্যাপী মন্দার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি সংবাদ সংস্থা রয়টারকে জানিয়েছেন, ২০২২ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৩.৬ শতাংশ। কিন্তু, এ নিয়ে পরপর তিন বছর হতে চলল, আইএমএফ আগামী মাসগুলিতে সেই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারবে না। যদিও এখনও চূড়ান্ত পরিসংখ্যান তৈরি হয়নি। মন্দার বহরটা কতটা তীব্র হবে, তা বোঝা যাবে এই মাসের শেষেই।
পাশাপাশি আইএমএফের মতে, চীনের আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিভিন্ন আর্থিক অবরোধের প্রভাবে মন্দার আসতে চলেছে। বিনিয়োগকারীরা এখন থেকেই মন্দার পূর্বাভাস পেয়ে অর্থ বিনিয়োগে কুঁকড়ে গিয়েছেন। এমনিতেই এখন বিশ্বের বড় দেশগুলিতে জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। ভারতও তার বাইরে নয়। ইউরোপীয় দেশগুলি এবং খোদ আমেরিকাতেও মানুষ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ব্রিটেনে তো দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ইস্তফার অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন অনেকে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ভারতের মতো দরিদ্র সংখ্যাধিক্যের দেশের কী অবস্থা হবে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। যে দেশের বহু মানুষ এখনই অনাহার-অর্ধাহারে দিনযাপন করে, আসন্ন মন্দায় তাঁদের কী পরিস্থিতি হবে, তার কথা ভেবেই শিউরে উঠছেন অনেকে।