কলকাতার একটা ক্যাফেতে বসে বাংলা গান গাওয়া হচ্ছিল। নিষিদ্ধ করা হল দুই শিল্পীকে। এমন ঘটনা সামনে আসতেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। বাংলা গান বাংলা ভাষা প্রত্যেকটি বাঙালির মনে প্রাণে। সেই গান গাওয়ার অপরাধে শিল্পীকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া যায়? বিতর্কে হোয়াটস আপ ক্যাফে। গায়ক দেবদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ড্রামার ঋক মিত্রকে আগামী এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে হোয়াটস আপ ক্যাফের বিরুদ্ধে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিষয়টি নিয়ে সরব নেটিজেনরা। প্রতিবাদে নামতে চলেছে ‘বাংলা পক্ষ’। গায়ক দেবদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে এবিষয়ে কিছু বলতে চাননি। পরে দেবদীপ বলেন, হোয়টস আপ ক্যাফের তরফে বলা হয়েছে কলকাতায় যেহেতু অবাঙালি শ্রোতার সংখ্যা বেড়েছে, সেজন্যই ওঁরা একটা আপত্তি তুলেছিলেন। তবে বিষয়টা আমাদের সঙ্গে ওঁরা মিটিয়ে নিতে চান। হোয়াটস আপ ক্যাফের তরফে বলা হয়েছে ওঁরা যেটা বলেছিলেন সেটা ফিরিয়ে নিচ্ছেন। ওখানে বাংলা গান গাওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন।
তবে ঘটনাটা ঠিক কী ঘটেছে, সেটা আমাদের জানান গায়ক দেবদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ড্রামার ঋক মিত্র। ঋক বলেন, ”হোয়াটস আপ ক্যাফেতে আগে প্রচুর বাংলা গান হত। তবে সম্প্রতি নিয়ম করা হয়েছে বাংলা ব্যান্ডের ওসি ছাড়া অন্য বাংলা গান গাওয়া যাবে না। শ্রোতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই এই নিয়ম করা হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে ওইদিন গাইতে গাইতে লতা মঙ্গেশকর ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের দে দোল গানটি (যেটি সম্প্রতি অরিজিৎ সিং গেয়েছেন) দেবদীপ গেয়ে ফেলে। আমি ওর ড্রামার। আমরা দুজনেই পারফর্ম করছিলাম। এরপর হোয়াটস আপ ক্যাফের তরফে আমাদের বলা হয়, বাংলা গান গাওয়ার জন্য এই মাসে আমরা ওখানে কোনও শো করতে পারব না। অগস্টে আবার করতে পারব। এটা শিল্পী হিসাবে অপমানজনক বলেই আমার মনে হয়েছে। খানিকটা স্কুল বয় পানিশমেন্টর মতো। তবে, আজ সকালে হোয়াটস আপ ক্যাফের তরফে বিষয়টি নিজেদের মধ্যে কথা বলে মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাবও দেওয়া হয়।
ওঁরা বলেন, সংবাদমাধ্যম জানালে কাদা ছেঁটাছেঁটি হবে। তার থেকে আমরা বিষয়টা নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে ফেলি। ওঁরা আজ ডেকেছেন। তবে আজ হয়ত আমি যেতে পারব না।” তবে ঋক আরও জানান, ”হোয়াটস আপ ক্যাফের মালিক অনির্বাণ সেনগুপ্ত কিন্তু এর আগে বহুবার আমাদের পারফরম্যান্সের প্রশংসা করেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। আমার মনে হয়, কোন অবাঙালি শ্রোতাদের জন্যই এটা করা হয়েছে। কারণ, আমাদের বলা হয় ক্যাফে থেকে বের হওয়ার সময় রিভিউতে এক ব্যক্তি লেখেন, শেষ গানটা যে কী গাইল বুঝলাম না।” ঋকের কথায়, ”এই খবরটা ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকে অনির্বাণ সেনগুপ্তকে ফোন করে অশ্লীল ভাষায় গালি দিচ্ছেন বলে শুনলাম, সেটাও কিন্তু আমরা সমর্থন করি না। আমার লক্ষ্য ওঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া নয়। আমরা চাই বাংলায় বাংলা গান হোক।”