দলের জনপ্রতিনিধিদের বার বারই জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিশেষত, গ্রামাঞ্চলে মানুষের সুবিধা- অসুবিধা জানতে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিশে যাওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়েওদলের বিধায়কদের একই পরামর্শ দিলেন মমতা৷
একই সঙ্গে বিধায়কদের কতজন ধান কাটতে বা কুটতে পারেন সেই প্রশ্নও ছুড়ে দেন মমতা৷ এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, তিনি অনেকের থেকেই ভাল ধান কাটতে এবং কুটতেও পারেন৷ কীভাবে তিনি ধান কাটা শিখলেন, সেই গল্প বলতে গিয়ে নিজের ছোটবেলাতেও ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী৷
এ দিন দুর্গাপুরে দুই বর্ধমান জেলাকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেখানেই বিধায়কদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাঝে মধ্যে আপানারা একটু গ্রামে যান, খাটিয়াতে বসুন৷ চায়ের দোকানে গিয়ে গল্প করুন৷ এগুলো আমি খুব পছন্দ করি৷ পারলে মাঠে গিয়ে মানুষের সঙ্গে হাত লাগিয়ে ধান কাটুন৷’ এর পরই বিধায়কদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, ‘কারা কারা ধান কাটতে পারেন? একটু হাত তুলুন তো দেখি৷ অবশ্য পূর্ব বর্ধমান জেলার অনেকেই পারবেন, আমি জানি৷’
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নে অনেক বিধায়কই হাত তোলেন৷ সংখ্যায় পূর্ব বর্ধমানের বিধায়করাই বেশি ছিলেন৷ এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কিন্তু সবার থেকে ভাল ধান কাটতেও পারি, কুটতেও পারি৷ তোমরা হয়তো ভাববে আমি কলকাতায় থেকেও কীভাবে শিখলাম? আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই তো গ্রামে একটা বাড়ি আছে৷ আমরাও ছোটবেলায় মামাবাড়ি আসতাম৷ তখন দেখতাম চাষিরা সব ধান কাটত না৷ তখন আমরা সেগুলো কুড়িয়ে রাখতাম৷ এর পর গ্রামে যাঁরা আলুর চপ, চুড়ি বিক্রি করতে আসতেন, তাঁদেরকে ওই ধান দিয়ে তার বিনিময়ে জিনিস নিতাম৷ আগে তো গ্রামে ধান, মুড়ি দিেয় জিনিস পাওয়া যেত৷ এখনও কি পাওয়া যায়?’
শুধু জনপ্রতিনিধিদের জন্য নয়, এ দিন সরকারি আধিকারিকদেরও গ্রামের মানুষের কথা ভেবে বাড়তি সময় বিডিও অফিস খুলে রাখার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, গ্রামের অনেকেই কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন৷ ফলে কাজ শেষ করতে করতেই তাঁদের বিকেল গড়িয়ে যায়৷ সেই কারণেই অন্তত বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বিডিও অফিস খুলে রাখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷