শেষমেশ ক্রমাগত চাপের মুখে ঢোঁক গিলতে বাধ্য হল মোদী সরকার। বাংলার বহুদিনের দাবি মেনে অবশেষে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ সেস প্রদানের মেয়াদ বাড়াতে বাধ্য হল কেন্দ্র। জিএসটির ক্ষতিপূরণ বাবদ আগামী ২০২৬ সালের ৩১শে মার্চ পর্যন্ত অর্থাৎ আরও প্রায় চার বছর ক্ষতিপূরণের অর্থ মিলবে। দেশের রাজ্যগুলির রাজস্ব খাতের ক্ষতি সামাল দিতে একমাত্র পথ ছিল সেস প্রদানের মেয়াদবৃদ্ধি। জিএসটি ক্ষতিপূরণের সময়সীমা বাড়ানোর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সরব রাজ্য সরকারগুলো। ওই দাবিতে রাজ্য সরকারগুলিই কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়িয়ে গিয়েছে। তবে এই দাবিতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমানে রাজ্যের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রও ক্ষতিপূরণের মেয়াদবৃদ্ধি দাবিতে লড়ছিলেন। একাধিকবার মোদী সরকারকে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৭ সালে জিএসটি চালু হয়। সেই সময় আইনে বলা হয়েছিল, এই নতুন করব্যবস্থা যতদিন না পর্যন্ত কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে রাজস্ব সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় ভারসাম্য আনবে, সেই সময় পর্যন্ত রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ সেস দেবে কেন্দ্র সরকার। ক্ষতিপূরণের সময়সীমা ৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি বছরের জুনে অর্থাৎ এই মাসেই সেই সময়সীমা শেষ হচ্ছে। গত কয়েকমাস যাবৎ জিএসটি কাউন্সিলের কাছে ক্ষতিপূরণ সেসের মেয়াদ অন্তত পক্ষে পাঁচ বছর বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে এসেছে রাজ্যগুলো। করোনা অতিমারী ও লকডাউনের কারণে অর্থনীতি ধাক্কা খেয়েছে বিগত দু-বছরে, ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় জিএসটি আদায় একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। সেই কারণেই মেয়াদ বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছিল রাজ্যগুলি। রাজ্যগুলির সঙ্গত দাবির কাছে, চাপের মুখে পড়ে রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে ২০২০ ও ২০২১ সালে যথাক্রমে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২১ সালে ১ লক্ষ ৫৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয় মোদী সরকার। যা রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তার সুদ মিটিয়েছে মোদী সরকার, আগামী বছর থেকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই ঋণের বোঝা কমাতে ক্ষতিপূরণ সেসের সময়সীমা বাড়ানো হল ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।