ফের বাংলার শিল্পক্ষেত্রে এল নতুন লগ্নী। কোভিড অতিমারীকালে অন্যান্য রাজ্যের আয় মুখ থুবড়ে পড়েছিল। ব্যতিক্রম ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে পারলে কোষাগার যে ভালোভাবেই ভরানো যায়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল বাংলা। অনলাইনে সুরাপ্রেমীদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে, তা বিভিন্ন খুচরো দোকান থেকে কিনে তা বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল রাজ্য আফগারি দফতর। তবে শর্ত ছিল, নির্দিষ্ট বয়সের ওপরেই তা সরবরাহ করা যাবে। এবার সেই ‘দুয়ারে মদ’ পরিষেবা পাকাপাকি করতে বিভিন্ন বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে রাজ্য সরকার। বিগত আর্থিক বছরে রাজ্যে সুরা বিক্রির উপর প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। বিভিন্ন বিনিয়োগকারীরা এই শিল্পের উপর বিনিয়োগ করতে মুখিয়ে আছে। উত্তরবঙ্গসহ রাজ্যে গড়ে তোলা হবে ৩টি কারখানা। এক্ষেত্রে রাজ্যের আফগারি দপ্তরে বিনিয়োগ হবে প্রায় ১২০০ কোটি। তাই এবার পাকাপাকিভাবে ‘দুয়ারে সুরা’ পৌঁছে দেওয়া যাবে। এমনই মনে করছে রাজ্য আফগারি দফতর। সূত্র অনুযায়ী জানা গেছে, শুধুমাত্র বিয়ারের কারখানা গড়ার জন্য বিনিয়োগ হবে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সুরা বিক্রির উপর রাজ্যের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সমস্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গিয়ে রাজ্যের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১৪ হাজার কোটি টাকা।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২২-২৩ এ সুরা বিক্রি থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম তিনমাসেই রাজস্ব আদায়ের ধারাবাহিকতা দেখে মনে করা হচ্ছে এবারেও ছাপিয়ে যাবে বিগত বছরের রাজস্ব আদায়ের রেকর্ড।।প্রসঙ্গত, গরমের সময় এমনিতে বিয়ারের চাহিদা থাকে। কিন্তু গত গ্রীষ্মকালীন বিয়ারের চাহিদা বিগত সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। আর তাতেই বিয়ারের সংকট দেখা গিয়েছিল রাজ্যে। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিগত মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে রাজ্যে ৬০০ টাকার বেশি বিয়ার বিক্রি হয়েছে। রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরার যোগান দিতে পর্যাপ্ত দোকানের পাশাপাশি বিয়ার ও সুরার কারখানা গড়ে তুলতে আগ্রহী রাজ্য আফগারি দফতর। সূত্রের খবর, একটি নামী বিয়ার কোম্পানি কলকাতার আশেপাশে বিয়ার কারখানা গড়ার জন্য ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে আপাতত ৩টি সংস্থাকে সুরা তৈরির কারাখানা গড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই কারখানা গড়ে উঠলে ভরপুর রাজস্ব আদায়ের পাশপাশি প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। এমনই অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।
