কার্যত নজিরবিহীন পদক্ষেপ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বারবার মোদী সরকারের বাংলা-বঞ্চনার অভিযোগ উঠছিল। ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের দুয়োরানিসুলভ আচরণের শিকার বাংলা। ডিসেম্বর থেকে বন্ধ অদক্ষ শ্রমিকদের মজুরি। রাজ্যের মোট বকেয়া ছাড়িয়েছে সাত হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থ বর্ষে এখনও পর্যন্ত বাংলার জন্য শ্রমদিবস শূণ্য। এমন পরিস্থিতিতে বাংলার জবকার্ড হোল্ডারদের জীবন জীবিকা স্বাভাবিক রাখতে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ১০০ দিনের কাজে কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন মমতা। পাশাপাশি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করতে।
এবার মমতার উদ্যোগ রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিল, রাজ্যের সমস্ত দফতরের চলতি প্রকল্পে সেই শ্রমিকদের কাজে লাগানোর। ২০শে মে প্রত্যেকটি দপ্তরকে জবকার্ড হোল্ডারদের কাজে লাগানো নির্দেশিকা জারি করে পঞ্চায়েত দফতর। কোন দফতর কোন জেলায় কত জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দিচ্ছে এবং তাঁরা কত মজুরি পাচ্ছেন, সেই হিসেব রাখতে তৈরি করা হয় একটি পোর্টাল। গত ২৭ মে থেকে এঁদের কাজ দিতে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন দফতর। প্রতিদিন কতজনকে কাজ দেওয়া হল, তা তুলে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট পোর্টালে। নবান্ন সূত্রে খবর, বিকল্প কাজ দেওয়ার এই উদ্যোগের নোডাল দফতর করা হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামীণ উন্নয়ন দফতরকে। আর এই দফতর সব থেকে বেশি জবকার্ড হোল্ডারদের কাজ দিয়েছে গত ২২ দিনে। ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৫৩ জনকে কাজ দেওয়া হয়েছে এই দফতর থেকে। জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দফতর কাজ দিয়েছে ১৭ হাজার ৪১৪ জনকে। পূর্ত দপ্তরের প্রকল্পগুলিতে কাজ পেয়েছেন ৯ হাজার ২০০ জন জবকার্ড হোল্ডার এবং কৃষি দফতর থেকে কাজ পেয়েছেন ৪ হাজার ৫৩৮ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে এমনটাই। পাশাপাশি, সর্বোপরি মমতার এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে রইল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।