বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরির অভিযোগে গত রবিবারই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল মহম্মদ জাভেদের প্রয়াগরাজের বাড়ি। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই বিতর্কে যোগী সরকার। ইংরেজি এক বেসরকারি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাড়িটির জলের বিল ও কর দেওয়া ছিল। এবং সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, বাড়িটি আদৌ জাভেদের নামেই নয়, তাঁর স্ত্রী পারভীন ফতিমার নামে! তাহলে কীভাবে জাভেদের নামে নোটিস দিয়ে ফতিমার বাড়ি ভাঙল প্রশাসন?
ওই ইংরেজি দৈনিকের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রয়াগরাজের জলকল বিভাগের রসিদ বলছে জলের বিল হিসেবে ৪,৫৭৮ টাকা মিটিয়ে দিয়েছিলেন ফতিমা। চলতি অর্থবর্ষের বাড়ির কর হিসেবে দেয় টাকাও মিটিয়ে দেওয়া ছিল পুরোপুরি। তবুও এক দিনের নোটিসে কী করে রবিবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হল জাভেদদের বাড়ি? এই নোটিসে যে বাড়ির নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেই বাড়িটি জাভেদের স্ত্রী ফতিমার নামে। তাহলে জাভেদের নামে জারি করা নোটিস দিয়ে কী করে ফতেমার বাড়ি ভাঙা পড়ল?
প্রসঙ্গত, বিজেপি মুখপাত্র নুপূর শর্মার (বর্তমানে নিলম্বিত বা সাসপেন্ডেড) বিতর্কিত মন্তব্যের প্রেক্ষিতে গত শুক্রবার বিক্ষোভ প্রদশর্নের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে সমাজকর্মী তথা ব্যবসায়ী মহম্মদ জাভেদকে। জাভেদ ও ফতেমার ছোট মেয়ে সুমাইয়া ফতিমাকে উদ্ধৃত করে সংবাদপত্রটি লিখেছে, ‘প্রয়াগরাজ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যে নোটিসটি জারি করেছিল, তা ছিল আমার বাবা অর্থাৎ মহম্মদ জাভেদের নামে। কিন্তু তারা ভাঙল আমার মায়ের বাড়ি! ২০ বছর আগে এই বাড়িটি আমার মা’কে উপহার দিয়েছিলেন আমার দাদু কামিলুদ্দিন সিদ্দিকি। পরে বাড়ির কিছু অংশ নতুন করে বানিয়ে নেওয়া হয়েছিল।’
ওই প্রতিবেদনেই ফতিমাদের আইনজীবী কেকে রায়কেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। তিনি রবিবারই জানিয়েছিলেন, রবিবার যে বাড়িটি বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হল তা পারভীন ফতিমার নামে। ফতিমা মহম্মদ জাভেদের স্ত্রী। অথচ, শনিবার প্রশাসন যে নোটিসটি জারি করেছে, তা জাভেদের নামে। মুসলিম ল’ অনুযায়ী, স্ত্রীর নামে থাকা সম্পত্তি স্বামীর সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হয় না। আর এর জেরেই বিতর্কের মুখে যোগী সরকার। ফের বেআব্রু হয়ে গিয়েছে তাদের মুসলিম বিরোধিতা।