এতদিন পদাধিকার বলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হতেন রাজ্যপাল। তবে সম্প্রতি রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজ্যপালের বদলে এবার আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের তরফে শীঘ্রই বিধানসভায় বিল এনে আইন সংশোধন করা হবে। ইতিমধ্যেই ওই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে রাজ্যের মন্ত্রিসভা। এছাড়াও রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয় এবং মৎস্য বিশ্ববিদ্যালয়েরও আচার্য হবেন মুখ্যমন্ত্রী। আর শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও সরকারের অবস্থান আরও মজবুত করা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও রাজ্যপালের জায়গায় পরিদর্শক করা হবে শিক্ষামন্ত্রীকে। অনেকেই বলছেন, গোটা দেশের মধ্যে এমন ঘটনা হবে বেনজির। আদতে কি তাই?
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালকে বসানোর এই প্রথার শিকড় রয়েছে ব্রিটিশ আমলে। ২০০৭ সালে বিচারপতি মদনমোহন পুঞ্চির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই কমিশনের সুপারিশ ছিল, রাজ্যপালের বদলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করা হোক মুখ্যমন্ত্রীদের। কিন্তু সার্বিকভাবে সেই সুপারিশ মানা হয়নি। রাজ্য সরকার সূত্রে খবর, এবার সেই পুঞ্চি কমিশনের সুপারিশ মেনেই নিয়মে বদল আনা হচ্ছে। কিছুটা একই ছবি ধরা পড়েছে তামিলনাড়ুতে। দক্ষিণের ওই রাজ্যে সাম্প্রতিককালে একটি বিল পাশ করা হয়েছে। যে বিল অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করার ক্ষেত্রে, রাজ্যপাল নয়, প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। অর্থাৎ, রাজ্যপাল নয়, তামিলনাড়ুর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এখানেই শেষ নয়, বাংলার মত তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভাতেও একটি বিল পাশ করা হয়। সেই বিলে বলা হয়, সেখানে তামিলনাড়ু সরকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করার পথে হাঁটতে চলেছে। মেডিসিন সংক্রান্ত বিষয়ের উপর তৈরি হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেবেন মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন। এমনটাই বলা হয়েছে ওই বিলে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে কেরালাতেও। সেখানে গত ডিসেম্বর নাগাদ রাজ্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ্ব চরমে উঠতেই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখে বলেন, ‘আচার্য হিসেবে পদে পদে অসম্মান এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া যায় না। তার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীই আচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করুন। কেরল বিধানসভার অধিবেশন এখন বন্ধ। এই মর্মে অর্ডিন্যান্স তৈরি করে আমার কাছে পাঠালে আমি সঙ্গে সঙ্গে সই করে দেব!’ যদিও এখনও এই মর্মে কেরালা সরকারকে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।
mamata banerjee