কাশ্মীরে নিরবচ্ছিন্ন হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই উপত্যকায় নিযুক্ত শত শত সরকারি কর্মচারী তাঁদের নিজ নিজ জেলায় অবিলম্বে বদলির দাবিতে বৃহস্পতিবার একটি মিছিলের ডাক দেয়। বিক্ষোভকারীরা নিজেদের দাবির সমর্থনে লেখা প্ল্যাকার্ড থেকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাঁদের সহকর্মী রজনী বালা, পেশায় স্কুল শিক্ষকা, যাঁকে মঙ্গলবার দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম জেলার একটি স্কুলের মধ্যে সন্ত্রাসবাদীরা গুলি করে হত্যা করে, তাঁর মৃত্যু কীভাবে আতঙ্কিত করেছে সাধারণ মানুষদের। প্রেসক্লাব থেকে আম্বেদকর চক পর্যন্ত এক মিছিল বের করা হয়।
‘জম্মুর সমগ্র সংরক্ষিত বিভাগীয় কর্মচারী সমিতি’র ব্যানারে একত্রিত হওয়া বিক্ষোভকারীরা জানান, সরকার টার্গেট কিলিং বন্ধ করতে এবং তাঁদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে। “জম্মুর বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় ৮,০০০ কর্মচারী আন্তঃজেলা বদলি নীতির অধীনে কাশ্মীরে কাজ করছেন এবং আমরা বর্তমান পরিবেশে ফিরে যেতে এবং আমাদের দায়িত্ব ফের পালন করা শুরু করতে পারব না। আমরা গত ১৫ বছর ধরে এখানে কাজ করছি কিন্তু টার্গেট কিলিং বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নিরাপত্তাহীন,” বলেন দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় পোস্টিং হওয়া শিক্ষক রমেশ চাঁদ।
তিনি আরও জানান, তাঁরা রজনী বালাকে শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর নাবালিকা কন্যার জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা ও একটি সরকারি চাকরি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাতে এসেছেন। ‘আমরা নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি দেখে হতাশ কারণ এখানে মুসলমান, হিন্দু এবং শিখ সহ কেউই নিরাপদ নয়। যে কেউ যে কোনও সময় সন্ত্রাসবাদীদের শিকার হতে পারে, কুলগামে রাজস্থানের ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বিজয় কুমারের হত্যার কথা উল্লেখ করে বলেন তিনি।
উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলায় পোস্টিং হওয়া শিক্ষিকা অঞ্জনা বালা বলেন, ‘আমাদের সরকারি বাসস্থান বা পদোন্নতির প্রয়োজন নেই, আমরা শুধু উপত্যকা থেকে আমাদের বদলি চাই কারণ প্রতিটি কর্মচারীকে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। উপত্যকায় কোনও নিরাপদ স্থান নেই এবং আমরা উপত্যকার মধ্যে বদলির সরকারী প্রস্তাব গ্রহণ করতে প্রস্তুত নই’। তিনি আরও জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে তাঁরা কখনই কোনও সমস্যার সম্মুখীন হননি, বরং তাঁরা তাঁদের সমর্থনই করেছে।