দুঃসময় অব্যাহত গেরুয়াশিবিরে। একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকেই বঙ্গ বিজেপিতে ‘শনির দশা’। একের পর নেতাদের দলত্যাগ, আভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাংগঠনিক দুর্বলতা ক্রমশ নড়বড়ে করে দিয়েছে দলের কাঠামো। যার জেরে ক্ষোভ বাড়ছে নেতৃত্বের অন্দরমহলে। আদি-নব্য দ্বন্দ্বও মাথাচাড়া দিচ্ছে। “এ যেন আলুর ধসা রোগের মতো পরিস্থিতি। দলটাকেই পচিয়ে ধসিয়ে দিল”, এমনই বার্তা বিভিন্ন জেলায় বিজেপি নেতাদের। এদের সিংহভাগই আদি বিজেপি নেতা। দলকে ভালোবেসে রয়েছেন। ক্রমাগত ধস দেখে প্রবল দুশ্চিন্তা ও হতাশায় ডুবে তাঁরা। লোকসভা নির্বাচনে বা থেকে ১৮ টি আসন নিয়ে চমক দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর ক্রমাগত আলগা হতে শুরু করেছে বিজেপির সংগঠন। সম্প্রতি দুটি আসন খুইয়েছে তারা। তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয় ও অর্জুন সিংহ। কেন্দ্রের বিজেপি নেতাদের দাবি, ৩২ টি আসনে বিজেপির অবস্থা তথৈবচ। যার অর্থ, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির দখলে থাকা একাধিক আসন এবার হাতছাড়া হতে পারে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে পদ্মশিবির।
জানা গিয়েছে, সংগঠনকে পুনরায় উজ্জীবিত করতে ত্রিস্তরীয় বিশেষ পরিকল্পনার কথা ভাবছে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের নেতারা। প্রতিটি আসনে নিয়মিত জনসংযোগে জোর দেবেন দলের নেতারা৷ এরই মধ্যে রাজ্যের প্রথম সারীর নেতারা একাধিক কর্মসূচীর মাধ্যমে উজ্জীবিত করবেন। ধীরে ধীরে সংগঠনের রাশ মজবুত হলেই বড় সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা। তবে হাল কতটা ফিরবে, তা বলা মুশকিল। দেখা গেছে, দেশে ১৪৪ টি লোকসভা আসনে বিজেপির অবস্থান একেবারেই জোরালো নয়। তার মধ্যে রয়েছে বাংলার ৭৫ শতাংশ আসন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নির্বাচনের আগে অন্যান্য দল থেকে নেতারা গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সময় বদলে এখন সেই নেতারাই বিজেপি ছাড়তে শুরু করেছেন। তাই রাজ্যে সংগঠনে তাসের ঘরের মত ধসে পড়তে শুরু করেছে। যা রীতিমতো রাতের ঘুম কেড়েছে মুরলীধরের নেতাদের।