অভিনব পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা। একথা সর্বজনবিদিত যে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় জীববৈচিত্রের গুরুত্ব অমূল্য। এবার সেই জীববৈচিত্র নিয়েই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নিল কলকাতা পুরসভা। দেশের প্রথম মেট্রো শহর হিসেবে জীববৈচিত্র্যের বিস্তারিত রেজিস্টার প্রস্তুত করল কলকাতা। গত ২১শে মে পিপলস বায়োডাইভার্সিটি রেজিস্টার (পিবিআর) প্রকাশ করেছে কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। উক্ত নথিতে কলকাতা শহরের ফ্লোরা, ফনাগুলোর বিশদ বর্ণনা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, জমির ব্যবহার এবং মানুষের ক্রিয়াকলাপের বিবরণও থাকছে ওই নথিতে। কলকাতাই প্রথম মহানগর, যা পিপলস বায়োডাইভার্সিটি রেজিস্টার তৈরি করল। এমনই জানিয়েছেন ন্যাশনাল বায়োডাইভার্সিটি অথোরিটির চেয়ারম্যান ভি.বি. মাথুর জানান।
উল্লেখ্য, বায়োডাইভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং বিভিন্ন এনজিওর সহায়তায় রাজ্যের বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এই রেজিস্টারটি নির্মাণ করা হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক দিবসের প্রাক্কালে এই রেজিস্ট্রারটি প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হতে চলেছে। রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী রত্না দে নাগ জানান, কলকাতার এই কৃতিত্ব অবশ্যই সকলের জন্য গৌরবের। কলকাতার জীববৈচিত্র্য রেজিস্টারের আয়তন প্রায় ৫২০ পৃষ্ঠা। যার মধ্যে ১৩৮টি প্রজাতির গাছ, ২৬ ধরনের চীনা সবজি, ৩৩ প্রজাতির ঔষধি গাছ এবং প্রায় ১০০টি অন্যান্য প্রজাতির উদ্ভিদের বিষয়ে নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, মহানগরীর ১৪৪টি ওয়ার্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় ৭০ প্রজাতির প্রজাপতি, ৪৭ প্রজাতির মাছ, ৮৪ প্রজাতির পাখি এবং ২২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণীসহ মোট ২৯০ ধরণের প্রাণীর প্রজাতির বিস্তারিত তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে৷ নথিভুক্ত করার সময় পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এবং রবীন্দ্র সরোবরের মতো হটস্পটগুলির জীববৈচিত্রকেও রেজিস্ট্রারে স্থান দেওয়া হয়েছে। ক্ষেত্র সমীক্ষার ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করা ছাড়াও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন আলোচনা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে পাওয়া তথ্যকেও। যা নিঃসন্দেহে কার্যকরী হবে মনে আশাবাদী বিশেষজ্ঞমহল।