এখনও কাটেনি ২৪ ঘণ্টা। মঙ্গলবার রাতেই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছেন বিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কে কে। সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের আবহ। তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না সঙ্গীতপ্রেমীরা। গতকাল নজরুল মঞ্চে গুরুদাস কলেজের সোশ্যাল ফেস্টে কিছুক্ষণ গান গাওয়ার পর অসুস্থতা বোধ করেন তিনি। তড়িঘড়ি হোটেলে ফিরে যান। আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তারপর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর এই অকালপ্রয়াণের পর নজরুল মঞ্চে কলেজ ফেস্টের আয়োজন নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্তের পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। আপাতত সমস্ত কলেজের সোশ্যাল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে প্রস্তাব দিয়েছে কেএমডিএ।
উল্লেখ্য, চারদিক ঢাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নজরুল মঞ্চে আসন সংখ্যা মেরেকেটে ২,৭০০। অথচ প্রিয় কেকে-কে দেখতে মঙ্গলবার ভিড় জমিয়েছিলেন অন্তত ৭০০০ অনুরাগী। এমন ভিড়ে পরিপূর্ণ অবস্থায় এসি চললেও তা আর কোনওভাবেই অনুভূত হচ্ছিল না। ফলে গরমে আরও হাসফাঁস অবস্থা তৈরি হয় নজরুল মঞ্চের ভিতর। তার মধ্যে ক্রমাগত স্পটলাইটের আলো আরও সমস্যায় ফেলেছিল কেকে-কে। সে আলো বন্ধ করার অনুরোধও জানিয়েছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আয়োজকদের দিকে ইতিমধ্যেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে কঠোর সিদ্ধান্তের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য। সে কথা জানিয়েছেন খোদ কলকাতার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম।
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে কেএমডিএ-র তরফে পুরমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ এসেছে, যে আপাতত কোনও কলেজ ফেস্টের জন্য নজরুল মঞ্চকে ব্যবহার করা যাবে না। এদিন ফিরহাদ বলেন, “নজরুল মঞ্চের যে আসন সংখ্যা, তার চেয়ে বেশি সংখ্যক দর্শক ঢুকিয়ে দিচ্ছে কলেজগুলো। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছে না তারা। যেখানে ২,৭০০ আসন রয়েছে, সেখানে ৭০০০ মানুষ প্রবেশ করেছে। এমনকী পাঁচিল টপকেও লোকজন ঢুকে পড়েছে। এটা একেবারেই নিয়মবিরুদ্ধ। তাই ফেস্ট বন্ধের ব্যাপারে সুপারিশ এসেছে। আমরা আলোচনা করে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” উল্লেখ্য এই নজরুল মঞ্চ হল কেএমডিএ-র অধীনস্থ। আর এই কেএমডিএ-র বোর্ড চেয়ারম্যানও ফিরহাদ হাকিম। আবার পুর-নগরোন্নয়ন মন্ত্রীও তিনি। ফলে কলেজ ফেস্ট বন্ধের সুপারিশে যে সবুজ সংকেতই মিলবে, তেমনই অনুমান করা যায়।