ফের বিতর্কের কেন্দ্রে উত্তরপ্রদেশের বিজেপিশাসিত সরকার। যোগী আদিত্যনাথের নতুন নির্দেশিকা নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল। সন্ধে ৭টার পর মহিলাদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না, কর্মক্ষেত্রে এমনই নিদান দিয়েছে যোগী সরকার। যদিও তাদের বক্তব্য, মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নয়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লিখিত অনুমতি ছাড়া সন্ধে ৭টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মহিলা কর্মীদের দিয়ে কাজ করাতে পারবে না কোনও সংস্থা। কোনও মহিলাকে যদি সন্ধে ৭টার পর বা সকাল ৬টার আগে কাজ করাতে হয়, তাহলে তাঁদের কাছে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। শুধু অফিসে গিয়ে নয়, ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ক্ষেত্রেও এই নির্দেশিকা কার্যকর হবে। অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোমে থাকাকালীনও কোনও মহিলাকে লিখিত অনুমতি ছাড়া সন্ধে ৭টার পর কাজ করানো যাবে না। শুধু তাই নয়, মহিলা কর্মীরা কোনও সংস্থায় সন্ধে ৭টার পর কাজ করার লিখিত অনুমতি দিলেও তাদের জন্য বিশেষ কিছু বন্দোবস্ত করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই সিদ্ধান্ত ঘিরে বইয়ে বিতর্কের ঝড়।
পাশাপাশি এই সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লিখিত অনুমতি থাকলেও রাতে ডিউটির ক্ষেত্রে একসঙ্গে অন্তত ৪ জন মহিলাকে রাখতে হবে। নাইট ডিউটি চলাকালীন অবশ্যই মহিলা কর্মীদের জন্য খাবার এবং পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে সংস্থাকে। মহিলাদের জন্য যথোপযুক্ত ওয়াশরুম এবং চেঞ্জিং রুমের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সব সংস্থাতেই মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য আলাদা কমিটি তৈরি করতে হবে। সন্ধে ৭টার পর ডিউটি করলে মহিলাদের বাড়ি ফেরার জন্য বিনামূল্যে ক্যাবের ব্যবস্থা করতে হবে সংস্থাকেই। যোগী সরকারের দাবি, মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর প্রশ্ন উঠছে, এই নির্দেশিকার মাধ্যমে ঘুরিয়ে মহিলাদের কর্মক্ষেত্রকে আরও সংকুচিত করে দেওয়া হচ্ছে না তো? এহেন নির্দেশিকা মানতে হলে বেসরকারি সংস্থাগুলি মহিলাদের চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে কুন্ঠা ও সংকোচ বোধ করবে। সেক্ষেত্রে মহিলাদের কাজের জায়গা আরও কমে আসতে পারে। আর শুধুই যদি নারী নিরাপত্তার কথা ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের ক্ষেত্রে কেন তাঁদের সন্ধের পর কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না? কোথাও কি ঘুরিয়ে বলে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে না যে সন্ধের পর কর্মক্ষেত্রে না থেকে সংসার সামলানো উচিত মেয়েদের? প্রশ্ন তুলছেন নারীবাদীরা। পাশাপাশি প্রতিবাদমুখর হয়েছে বিরোধী দলগুলি। দেশজুড়ে নিন্দায় সরব হয়েছে বুদ্ধিজীবী মহলও।