শহরের থেকে গ্রামের অসুবিধার পরিমাণ যে অত্যাধিক তা অজানা নয় কারুর। বিশেষত চিকিৎসকের অভাব বহু প্রাচীন। আচমকা কেউ অসুস্থ হলে বা হঠাৎ কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে তৎক্ষণাৎ শহরে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। গ্রামেই থাকা উচিৎ তার যাবতীয় ব্যবস্থা। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই অভাব পূরণ হয়নি। যদিও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব নেই। পশ্চিমবঙ্গে এমন চিত্রটা বদলাতে বিশেষ উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি সবসময় সমস্ত পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। তিনি কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কমিউনিটি হেলথ অফিসার নামে একটি পদে নার্সদের বহাল করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ডাক্তারি চিকিৎসায় প্রাথমিক শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করা হবে নার্সদের। সেই ‘ডাক্তারি’ প্রশিক্ষণ এবার শুরু হতে চলেছে রাজ্যে। শুক্রবার সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিঠি দিয়ে সেই প্রশিক্ষণের সূচি, নিয়মাবলি ও ব্যয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যভবনের তরফে। প্রাথমিক পর্যায়ে আপাতত সিএইচও প্রশিক্ষণ সবচেয়ে বেশি দেওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের নার্সদের। সেখানে ৮৫ জনকে এই ট্রেনিং দেওয়া হবে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এই জেলায় ৭৬ জন নার্সকে বাছাই করে ডাক্তারি ট্রেনিং দেওয়া হবে। পূর্ব বর্ধমানের ৬৩ জন পাবেন এই বিশেষ প্রশিক্ষণ। সিএইচও-ও পদের জন্য সবচেয়ে কম প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এই পর্যায়ে আলিপুরদুয়ারে। উল্লেখ্য, ছ’জন নার্সকে দিল্লি পাঠানো হয় প্রশিক্ষণ নিতে। তারপরে এই পদক্ষেপ। এর ফলে গ্রামীণ এলাকায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় বেশ কিছুটা সুবিধা হবে, আরও বেশি পরিষেবা মিলবে, এমনই আশা সরকারের। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, প্রথম দফায় নার্সিংয়ে বিএসসি বা পোস্ট-বেসিক পাস করা ৭০৪ জন নার্সকে সিএইচও পদের জন্য ন্যূনতম কিছু ডাক্তারি পাঠ দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা অতি সাধারণ রোগভোগের ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষকে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন। এমনকী ওষুধ খাওয়ার সুপারিশও করতে পারেন। তবে এই প্রশিক্ষণ নিয়ে ‘ডাক্তারি’ করলেও তাঁরা যে কোনও প্রথাগত প্রেসক্রিপশন কিংবা ডেথ সার্টিফিকেট লিখতে পারবেন না, তা জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।