সম্প্রতি মার্কিন মুলুককে ঘটে গেছে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। টেক্সাসের ইউভ্লেডের এলিমেন্টরি স্কুলে বন্দুকবাজের হানায় ১৯জন শিশু-সহ মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবার এর প্রেক্ষিতে ভারতে আগ্নেয়াস্ত্র সংক্রান্ত আইন আরও কঠোর করার আহ্বান জানালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম। বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি দাবি করেন, এই বিষয়ে আমেরিকার আইন খুবই সহনশীল। এরপরই তিনি বলেন, ভারতেরও উচিত আগ্নেয়াস্ত্র কেনা এবং রাখার বিষয়ে যে আইনগুলি রয়েছে সেগুলি পর্যালোচনা করা এবং কঠোর করা।
এবিষয়ে চিদম্বরম বলেন, “টেক্সাসের একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীর ১৯ জন শিশুর ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করার কোনও ভাষা নেই। মার্কিন জনগণ এবং শোকাহত পরিবারগুলির সঙ্গে সঙ্গে গোটা বিশ্ব শোকাহত। যেহেতু ঘৃণামূলক ভাষণ এবং ঘৃণা থেকে হত্যা বাড়ছে, আমাদের অবশ্যই এই উন্মাদনায় পুরো বিশ্বের ধ্বংস হওয়া আটকাতে সমস্ত উপায় ব্যবহার করতে হবে। একটি উপায় হল কঠোর বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন আরোপ করা এবং কারা অস্ত্র কিনতে পারবে বা রাখতে পারবে তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা। আমেরিকান আইন এই বিষয়ে খুবই শিথিল এবং সহনশীল, ভারতকেও আগ্নেয়াস্ত্র অধিগ্রহণ এবং রাখা সংক্রান্ত আইন পর্যালোচনা এবং কঠোর করতে হবে।”
দেশের আইন অনুযায়ী বিভিন্ন পরিস্থিতির ভিত্তিতে আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়া হয়। ভারতে প্রতি ১০০ জনে আনুমানিক ৫ জনের কাছে অসামরিক আগ্নেয়াস্ত্র (সেনা বা পুলিশের অস্ত্র নয়) রয়েছে। নাগরিকদের অস্ত্র রাখার ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে ভারত রয়েছে ১২০ নম্বরে। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়, আধা-স্বয়ংক্রিয় এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরনের অন্যান্য আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দেওয়ার অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারের। বাকি আগ্নেয়াস্ত্রগুলির ক্ষেত্রে অনুমতি দিতে পারে রাজ্য সরকারগুলিও। এছাড়া, ভারতে প্রকাশ্যে খোলা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরা নিষিদ্ধ। যে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র, বিশেষভাবে নকশা করা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভারতে ৩৩ লক্ষেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। এই লাইসেন্সগুলির আওতায় নিবন্ধিত রয়েছে ৯৭ লক্ষেরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র ৷ সবথেকে বেশি ছিল উত্তরপ্রদেশে, ১২ লক্ষ ৭৭ হাজারেরও বেশি। আর বাংলায় ছিল ৬০ হাজারেরও বেশি। অবশ্য, ‘স্মল আর্মস সার্ভে’ অনুযায়ী ৬ কোটিরও বেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে ভারতে।