কথায় আছে কন্যা দান বড় দান। মেয়ের বিয়ে কী মুখের কথা? গরীব পরিবার। বাবা ১০০ দিনের কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে ১০০ দিনের টাকাও পাচ্ছিলেন না। এমন নিদারুন আর্থিক সংকটের মধ্যেই তাঁর মেয়ে স্মৃতিকা ভাওয়ালের বিয়ে ঠিক হয় জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী কৃষ্ণ দাসের সঙ্গে। অত্যন্ত ভাল খবর। কিন্তু এত টাকা কোথায়? মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে বেজায় সমস্যায় পড়েছিলেন বাবা। ভগবানের মতো পাশে দাঁড়াল মানবিক পুলিশ। প্রীতিভোজ থেকে কন্যাদান সবকিছুর আয়োজন হল জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট থানার আইসি এবং তাঁর টিমের নেতৃত্বে।পুলিশের এহেন উদারতা দেখে আপ্লুত ডুয়ার্সের বাসিন্দারা। জানা গেছে, গয়েরকাটা এলাকার বাসিন্দা দিলীপ ভাওয়াল। পেশায় তিনি একজন দিন মজুর। বৃদ্ধ বয়সে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তেমনভাবে কোনও কাজ করতে পারছিলেন না।
কোনও মতে সংসার চলত। ভাল পাত্র পেয়ে মেয়ের বিয়ে তো ঠিক করে ফেলেন দিলীপ বাবু, কিন্তু বিয়ে দেওয়ার টাকা কোথায়। পাড়া-প্রতিবেশীরাও দুশ্চিন্তা শুরু করেন এই নিয়ে। তাঁরাই বিষয়টি নিয়ে দারস্থ হন বানারহাট থানার ট্রাফিক গার্ডের অফিসে। আই সি শান্তনু সরকার জানান, মূলত আমাদের ট্রাফিক পুলিশ এই সুন্দর উদ্যোগটি নিয়েছে। ওঁরাই আমাকে বিষয়টি জানান। এর পর আমার পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব স্মৃতিকার বিয়েতে সাহায্য করেছি। কন্যা সম্প্রদানও করি। এভাবেই মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়াক, এটাই চাই। ওরা দু’জনে সুখে সংসার করুক। কৃষ্ণ ও স্মৃতিকার চার হাত এক করে দিয়ে কন্যাদান করেন তিনিই। বিয়ের পরে ছিল প্রীতিভোজের ব্যবস্থাও। নিমন্ত্রিত ছিলেন এলাকার মানুষ। বিয়ে দেখে, খাওয়াদাওয়া সেরে, পুলিশকে ধন্যবাদ দিয়ে বাড়ি ফেরেন এলাকাবাসীরা। মেয়ের বিয়ে সারার পরে দিলীপ ভাওয়াল জানান, পুলিশকে আমার দেবদূত মনে হচ্ছে।
