বাঙালি বরাবরই আড্ডা প্রিয় জাতি। পাড়ার মোড় হোক বা রকে, স্কুলের টিফিন আওয়ার্স হোক বা অফিস যাওয়ার পথে ও বাজার করে ফেরার সময় রাস্তায়— আড্ডা জুড়ে দিতে বেজায় পারদর্শী তারা। এবার লালবাজারে কলকাতা পুলিশের হেডকোয়ার্টারেও তার অন্যথা হল না। পুলিশ কমিশনার বিনীতকুমার গোয়েল নতুন এক ‘নিয়ম’ করেছেন। রোজ সন্ধ্যায় ছ’টার সময় লালবাজারে তিরিশ মিনিটের রিসেস মিলছে তাঁরই নেতৃত্বে। সেই সময়েই জমে উঠছে আড্ডা। রীতিমতো মুড়ি, তেলেভাজা, চানাচুর, সিঙাড়া, চা-সহযোগে। ছুটির দিন বা শহরে বড় কোনও মিছিল-মিটিং থাকলে অবশ্য এই সুযোগ মেলে না। তবে তা না থাকলে সন্ধেবেলায় এমনই আড্ডা ডমে লালবাজারের মেন বিল্ডিংয়ের এক নম্বর কনফারেন্স রুমে।
তবে এ আড্ডা নিয়েও রয়েছে কড়াকড়ি। কারণ পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের নির্দেশে এখানে হাজির থাকতেই হয় যুগ্ম কমিশনার থেকে স্পেশাল কমিশনার সবাইকেই। কী এমন হয় সেই আড্ডায়! এই নিয়ে কৌতূহলও বিস্তর। সূত্রের খবর, আড্ডা আসলে ছুতো, আসলে হাল্কা মেজাজে সমস্ত অফিসারদের কাজের ফিরিস্তি নেন তিনি। এমনকী অপরাধের কিনারা করা থেকে অপরাধ মোকাবিলায় কৌশল ছকে নেওয়ার কাজও সেরে নেন ওই সময়ে। শুধু তাই নয়, শোনেন অফিসারদের অভাব-অভিযোগও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজের মাঝে এ হেন আড্ডা আসলে কাজের উৎপাদনশীলতাকেই বাড়ায়। অফিসিয়াল চাপ, পেশাদারি বৈঠকের মাঝে এই ধরনের খোলামনে সময় কাটালে ক্লান্তি কাটে সহজে। দূর হয় উদ্বেগ। কাজেও বেশি মন বসে এর ফলে। সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল হয়। ফলে সব মিলিয়ে এই সবটাই ইতিবাচক একটা প্রভাব ফেলে কাজে।
