লাল-হলুদের ভক্তদের মনে খুশির হাওয়া। এসেছে সুখবর। ইনভেস্টর হিসেবে যুক্ত হয়েছে ইমামি গ্রুপ। তবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যে এই প্রথম তারা যুক্ত হল এমনটা নয়। কিংফিশার আসার আগে স্পনসর হিসেবে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত ছিল তারা। তখন অবশ্য ছিল স্পনসর হিসেবে, এখন ইনভেস্টর হিসেবে। পুরো প্রক্রিয়াটাই হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে। তবে ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর হিসেবে ইমামির ভূমিকাটা কি হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ঠিক হয়েছে, ক্লাবের সঙ্গে বসে চুক্তির বাকি ব্যাপারগুলি ঠিক করে নেবেন ইনভেস্টর কর্তারা। তার আগে এদিন ইস্টবেঙ্গলের ইনভেস্টর হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারিভাবে ঘোষণার পর সাক্ষাৎকার দিলেন ইমামি গ্রুপের ডিরেক্টর, আদিত্যবর্ধন আগরওয়াল। জানালেন, “সবই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। দিদির উদ্যোগেই ইস্টবেঙ্গলের মতো ইতিহাস সমৃদ্ধ ক্লাবের সঙ্গে আমরা ফের যুক্ত হতে পেরেছি। স্পোর্টসকে ঘিরে পুরোটাই দিদির আবেগের জন্য ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমাদের এই চুক্তিটা সম্পন্ন হল। এটুকু বলতে পারি, দিদি যখন লাল-হলুদের সঙ্গে আমাদের চুক্তির কথা ঘোষণা করলেন, মুহূর্তটা ইমামি গ্রুপের জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত। কারণ, ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল হচ্ছে ‘আইকনিক’ ক্লাব।”
এরপর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, লাল-হলুদের ইনভেস্টর হওয়ার পর সমর্থকদের খুশি করার ব্যাপারটাও নিশ্চয়ই আপনাদের মাথায় রয়েছে? উত্তরে আদিত্য জানান, “দেখুন, সবে একটা সম্পর্কের কথা ঘোষণা হয়েছে। এরপর সব কিছু নিয়ে আমরা ক্লাবের সঙ্গে আলোচনায় বসব। তবে লাল-হলুদ সমর্থকদের জন্য এটুকু বলতে পারি, তাদের মুখে নিশ্চিতভাবে হাসি ফোটাব। ইস্টবেঙ্গল দলকে আমরা একটা ভাল মানে পৌঁছে নিয়ে যাব, যা দেখে সমর্থকরা খুশি হতে পারেন।” এরপর বলেন, “শুধু ফুটবল কেন? ইমামি গ্রুপ টেনিস সহ বিভিন্ন খেলাধুলোয় অনেকদিন ধরেই পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। খেলাধুলোয় পৃষ্ঠপোষকতা করা আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়।” এরপর মমতাকে সাধুবাদ জানান, “আগেই বলেছি, আইএসএলের জন্য ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ফের সম্পর্ক তৈরি হওয়াটা দিদির সাহায্য ছাড়া কিছুতেই সম্ভব হত না। ফুটবলের প্রতি দিদির অসম্ভব প্যাশনটাই ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমাদের চুক্তি করতে সাহায্য করেছে।” নামকরণ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কথা সবে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। এখনই এই সব টেকনিক্যাল ব্যাপারে কোনও উত্তর দেওয়ার জায়গায় নেই আমরা। আগে ক্লাবের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসব। তারপর সময় মতো সবকিছু যৌথভাবে জানিয়ে দেব।”
চুক্তি প্রসঙ্গে ইমামির শীর্ষকর্তা জানান, “চুক্তির কোনও টেকনিক্যাল ব্যাপার নিয়ে এই মুহূর্তে আমরা বলার জায়গায় নেই। আজ শুধু আমাদের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের সম্পর্কের কথা মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। ফুটবলের উন্নতির জন্য এখন থেকে ইমামি গ্রুপ ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে চলবে। বাকি কার হাতে কত শেয়ার, চু্ক্তির বাকি শর্ত, সব কিছু সঠিক সময়ে আলোচনা করে জানানো হবে।” পাশাপাশি জানান, ইমামি গ্রুপ মনে করে, খেলাধুলোর উন্নতিতে সব কর্পোরেট সংস্থারই এগিয়ে আসা একান্ত কর্তব্য। খেলাধুলোর সঙ্গে, ক্রীড়াবিদদের প্রোমোট করার কর্পোরেট কর্তব্য থেকেই তাঁরা এসেছেন। ইস্টবেঙ্গলের মাধ্যমে ফুটবল এবং ফুটবলারদের কতটা ভাল করা যায়, সেটাই মূল লক্ষ্য। “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে একসঙ্গে আমরা ফুটবল এবং ফুটবলারদের উন্নতিতে চলব। আমাদের দু’পক্ষের এই চলার পথ অত্যন্ত মসৃণ হবে বলেই আশা করছি। আর আগেই বলেছি, খেলাধুলো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আবেগ, আমাদেরও ভাল কিছু করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে,” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করে জানান আদিত্য।