বঙ্গ বিজেপির যেন শনির দশা চলছে! একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই দলের অন্দরে চলছে মুষল পর্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, লোকাল ট্রেন থেকে কলকাতার রাজপথে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এর মধ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করল বারাকপুরের সংসদ অর্জুন সিংহের দল বদল। যার ফলে ‘আদি’ বিজেপির সঙ্গে ‘নব্য’ বিজেপির দ্বন্দ্ব আর আড়াল করা যাচ্ছে না। এবার যেমন দিলীপ ঘোষের “গরুর দুধে সোনা” মন্তব্যকে আইনস্টাইন-সুলভ মন্তব্য বলে কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা।
প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিজেপির একাংশকে বারবারই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায়, কেউ একেবারে প্রকাশ্যে রাজ্য নেতৃত্বের ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খুলেছেন। আর অর্জুন সিং-এর দলবদলের পর বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার মন্তব্য নতুন করে বুঝিয়ে দিচ্ছে, চিড় ধরেছে সম্পর্কে। কোনও নির্দিষ্ট নেতার নাম না করেই দলের ব্যর্থতা নিয়ে সোমবারই ফেসবুকে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অনুপম। পরে সাংবাদিক বৈঠকে সেই প্রসঙ্গে অনুপমকে জবাব দেন দিলীপ। আর তারই উত্তরে আর দিলীপকে কটাক্ষ করেছেন অনুপম। দলের সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন মন্তব্য করেছেন অনুপম, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিলীপ। আর তার জবাব দিতে গিয়ে অনুপম প্রথমেই বলেন, ‘এ যেন ঠাকুর ঘরে কে, আমি তো কলা খাইনি।’
অনুপমের দাবি, দিলীপ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে কিছুই বলেননি তিনি, শুধু শুধুই পুরোটা গায়ে মেখেছেন দিলীপ বাবু। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য প্রসঙ্গে অনুপমের দাবি, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর জের দেন। গুরুত্ব না থাকলে কি মোদী এ ভাবে জোর দিতেন? প্রশ্ন তুলেছেন অনুপম। তাঁর দাবি, সবসময় আন্দোলন করেই দলের জন্য কাজ করা যায় না, বুদ্ধি দিয়েও দলের জন্য অনেক কিছু করা যায়। সব শেষে দিলীপের পুরনো মন্তব্যের উল্লেখ করে অনুপম বলেন, ‘কোথায় কী বলছেন, সেটাও অনেক সময় ভাবা দরকার। কেউ যদি দুধ থেকে সোনা আবিষ্কার করতে যান, আইনস্টাইন-সুলভ মন্তব্য করেন, তাতেও দলের ক্ষতি হয়। সেটাও ভেবে চিন্তে বলা উচিত।’