অবশেষে জল্পনায় পড়ল ইতি। ‘ঘর ওয়াপসি’ ঘটল অর্জুন সিংয়ের। মুকুল রায়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর তৃণমূলে ফিরলেন তিনিও। প্রায় তিন বছর পর ঘাসফুল শিবিরে ফিরে এলেন ভাটপাড়ার দাপুটে নেতা তথা বিজেপি সাংসদ। রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূল সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে জোড়াফুলের পতাকা হাতে নিলেন তিনি। আর তারপরই বদলে ফেললেন নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার ছবি। বিগত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্মশিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন ভাটপাড়ার তিনবারের বিধায়ক অর্জুন সিং। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, অর্জুন আশা করেছিলেন, তাঁকে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু আশাহত হন। আর সেই কারণেই সম্ভবত অসন্তুষ্ট হয়ে জোড়াফুল শিবির ত্যাগ করে গেরুয়া বনে প্রবেশ করেছিলেন। ২০১৯-এ বিজেপি অর্জুন সিংকে ব্যারাকপুরের প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের সুযোগ দেন। ব্যারাকপুরের ২ বারের তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে অনায়াসে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন অর্জুন।
যদিও এরপর অবশ্য পদ্ম-পরিবারে অর্জুনের কাজকর্মের রাস্তা অমসৃণ ছিল। সম্প্রতি পাটশিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বিজেপি সাংসদ। পাট শ্রমিকদের স্বার্থে প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও একমঞ্চে আন্দোলনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। দফায় দফায় কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হয় জুট বোর্ডের সঙ্গেও। সূত্রের খবর, শেষ বৈঠকে অর্জুন সিংয়ের চাপের মুখে পড়ে পাটের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করার পথে হেঁটেছে জুট বোর্ড। তা নিঃসন্দেহে অর্জুন সিংয়ের সাফল্য। তবে তারপরও বিজেপিতে থাকতে আর চাননি ব্যারাকপুরের সাংসদ। এদিন কলকাতায় আসার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, “তৃণমূল কংগ্রেস তৈরির আগে থেকেই আমার সঙ্গে মমতার সম্পর্ক ভাল। রাজনীতির বাইরেও সম্পর্ক থাকে একটা। আমি তো তৃণমূলে ২৩ নং হয়ে থাকতে চাই।” পুরনো দলে ফিরে নতুনভাবে কাজ করতে চান তিনি। বারবারই অর্জুন সিং জানিয়েছেন, পাট শ্রমিকদের জন্য তিনি যে কোনও দিকে যেতে প্রস্তুত। সে কথাই রাখলেন। রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা হাতে নিলেন অর্জুন। যথারীতি তাঁর যোগদানের পর আরও চাপে বিজেপি-নেতৃত্ব। সংগঠন আরও দুর্বল হয়ে পড়ার প্রমাদ গুনছে তারা।