বঙ্গ বিজেপির যেন শনির দশা চলছে! একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই দলের অন্দরে চলছে মুষল পর্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, লোকাল ট্রেন থেকে কলকাতার রাজপথে দলীয় নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার— নানা ভাবে দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে দলেরই অন্য অংশকে। একের পর এক পুরভোট, উপনির্বাচনে হারের পর সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও বড় চেহারা নিয়েছে। এই আবহেই ঝাড়গ্রামের সভা থেকে বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাক বাজিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এতেই বিপাকে পড়েছে গেরুয়া শিবির। পরিস্থিতি এমনই যে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দল প্রস্তুত নয় বলে সরাসরি স্বীকারই করে নিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
এখনও পর্যন্ত বুথ কমিটি দূরঅস্ত, সব মণ্ডল কমিটিও গঠন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। কমিটি গঠন নিয়ে দলের অন্দরে যে ক্ষোভ রয়েছে তাও স্বীকার করে নিয়েছেন। শুক্রবার থেকে জয়পুরে শুরু হয়েছে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। সেখানে বঙ্গের সংগঠন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে সংগঠনের অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কী রিপোর্ট দেবেন তা নিয়ে অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বৃহস্পতিবার সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েই জয়পুর চলে যান সুকান্ত।
অন্যদিকে, ঝাড়গ্রামের সভা থেকে দ্রুত পঞ্চায়েত নির্বাচন করবেন বলে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার বক্তব্যের পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে। কিন্তু বিজেপি কি আদৌ গ্রামের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো সাংগঠনিক অবস্থায় রয়েছে? প্রশ্ন উঠেছে দলের অভ্যন্তরেই। কারণ জেলা কমিটির পর মণ্ডল কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতেই দলের ভিতর বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। অনেক জেলাতেই দল ছাড়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছে। অভিযোগের তির রাজ্য নেতৃত্বের দিকে। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ দলত্যাগী নেতাকর্মীদের। ক্ষোভে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন অনেক শীর্ষ নেতা। এমন পরিস্থিতিতে ভোট হলে মানুষের মনে দাগ কাটার মতো ফল হবে না বলেই মনে করছেন অনেক নেতাই।