এবার আরও সুর চড়ালেন অর্জুন সিংহ। তার সঙ্গে বাড়িয়ে দিলেন ঘর ওয়াপসির জল্পনা। ১৫ দিনের মধ্যে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করবেন তিনি। তিনি বলেন, “আমি তো আগেই বলেছি, যা বলার ১৫ দিন পরে বলব। চিন্তা করবেন না। বোমা ফাটাব।”।সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডার সঙ্গে অর্জুনের বৈঠক সে ভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। তার পরই বোমা ফাটানোর ইঙ্গিত দিলেন তিনি। এই ঘোষণার পরে বঙ্গ বিজেপিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে। সূত্রের খবর, অর্জুনের মনের খোঁজে রাজ্যের কয়েকজন বিজেপি নেতা তাঁকে মঙ্গলবার ফোন করেন। তবে অর্জুন কারও ফোনই তোলেননি। এমনকী, তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বিজেপি নেতাও মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। সোমবার রাতেই তিনি জার্মানি উড়ে যান। সেখান থেকেই এই ঘোষণা করেন অর্জুন।
সূত্র অনুযায়ী, সোমবার রাতে নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বঙ্গ বিজেপির সংগঠনের বেহাল অবস্থার কথা অর্জুন তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি এ রাজ্য থেকে বিজেপি এতগুলি লোকসভা আসনে জেতার পরও কেন বাংলার কাউকে পূর্ণমন্ত্রী করা হলো না, তা নিয়ে নাড্ডার কাছে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। বৈঠকে উঠেছে পাটশ্রমিকদের প্রসঙ্গও। যদিও পাটশ্রমিকদের নিয়ে অর্জুনের সওয়াল নিয়ে বিশেষ মাথাব্যথা নেই বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের। তাঁদের উৎসাহ মূলত দু’টি বিষয়ে। প্রথমত, নাড্ডার কাছে তিনি দলের কোন কোন নেতার নামে কী নালিশ করলেন। দ্বিতীয়ত, জল্পনা সত্যি প্রমাণ করে অর্জুন আদৌ তৃণমূলে ফিরে যাবেন কি না। জার্মানি থেকে অর্জুনের বোমা ফাটানোর ঘোষণা সেই জল্পনা আরও জোরালো করল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিরা।
এপ্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির এক বর্ষীয়ান নেতা জানান, “দিল্লী যাওয়ার আগে অর্জুন বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের বিরুদ্ধে তোপ দেগে যে যে অভিযোগ করেছেন, তার একটিও ভিত্তিহীন নয়। আমাদের সংগঠন কী ভাবে চলছে, তার খুঁটিনাটি অর্জুনের জানা। নাড্ডার কাছে তিনি সেগুলি তথ্যপ্রমান সহ তুলে ধরলে অনেকেরই পর্দা ফাঁস হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি দলবদল করলে তাঁর কোনও অভিযোগই মান্যতা পাবে না।” নাড্ডার সঙ্গে তাঁর বৈঠক সে ভাবে ফলপ্রসূ হয়নি। তার পরই অর্জুনের এই ঘোষণা। এই প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “উনি কোথায় যাবেন, সেটা উনিই বলতে পারবেন। অর্জুন সিং আমাদের দলের সিনিয়র নেতা। পার্টিতে যদি কোনও মনোমালিন্য হয়, তবে পার্টির মধ্যেই আমরা মিটিয়ে নেব।” তবে অর্জুন প্রসঙ্গে বালিগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক বাবুল সুপ্রিয়র ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “অর্জুন হচ্ছেন পাণ্ডব ও কৌরবদের মধ্যে একমাত্র ব্যক্তি, যাঁর লক্ষ্য ছিল পাখির চোখ। অর্জুন সিং কী ভাবছেন, তা নিয়ে আমার কোনও মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। উনি অনেক দিনের রাজনীতিবিদ।”