একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি, নেতাদের দলত্যাগ, উপর্যুপরি দলীয় নেতার বেসুরো হওয়ার ঘটনা। সব মিলিয়ে কার্যত দিশেহারা গেরুয়াশিবির। রাজ্যজুড়ে তাদের সংগঠনের অবস্থাও তথৈবচ। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় হলদিয়া ও ময়নার চারটি মণ্ডল কমিটির সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়েছিল বিজেপির তরফে। কিন্তু, নাম ঘোষণার মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই সেই তালিকা বাতিল করা হয়। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, চাপে পড়েই তালিকা প্রত্যাহার করেছে বিজেপি। দলবদলকারী নেত্রী হলদিয়ার বিধায়ক তাপসী মণ্ডল এবং ময়না বিধায়ক অশোক দিন্দার চাপের মুখে পড়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে ওই তালিকা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। আর সেই নির্দেশ অনুসারেই সোমবার বিকেলে তপনবাবু ময়না উত্তর মণ্ডলে মাধব বেরা, ময়না দক্ষিণ মণ্ডলে সুশান্ত মিদ্যা, হলদিয়া নগর-৩ মণ্ডলে দেবাশিস দাশগুপ্ত এবং সুতাহাটা-১ মণ্ডলে সুরজিৎ মালাকারকে সভাপতি হিসেবে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এরপর রাতের দিকে একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি জানান, ওই চার মণ্ডল কমিটির সভাপতির নাম স্থগিত রাখা হল। রাজ্য সভাপতির নির্দেশেই তিনি এই কাজ করেছেন বলে জানান। যদিও রাজনৈতিক মহলের মতে, এর নেপথ্যে রয়েছে পদ্মশিবিরের ক্রমবর্ধমান অন্তর্দ্বন্দ্ব।
প্রসঙ্গত, তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মোট ৪৪ টি মণ্ডল রয়েছে। এদিকে ৪০টিতে মণ্ডল সভাপতির নাম ঘোষণা করা হলেও ৪ টি তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। সোমবার সেই তালিকা প্রকাশ করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করে নেয় বিজেপি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এ প্রসঙ্গে মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যজুড়ে এদের ক্ষয় শুরু হয়েছে। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে বিজেপি। তাপসী মণ্ডল, অশোক দিন্দা এরা সব হুমকি দিয়েছে যে এই মণ্ডল কমিটি যদি প্রত্যাহার না করে তাহলে তারা অন্য দলে চলে যাবে অথবা দল থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে। আজ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে আর আগামীদিনে দল থেকে বেরিয়ে যাবে। তাই দলের তরফেই ভাবনা চিন্তা করা হয়েছে যে বিধায়কদের খুশি করতে হবে। না হলে দলটাই পুরো উঠে যাবে। সেই কারণেই আবার তালিকা প্রত্যাহার করা হয়।” এই রাজ্য থেকে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে, এই সুরেই বিজেপিকে কটাক্ষ করেন তিলকবাবু। স্বাভাবিকভাবেই চাপে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।