অবশেষে এবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট(ইডি)-এর সঙ্গে আইনি লড়াইয়ে জয় পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, অভিষেক এবং রুজিরাকে কয়লা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে তা কলকাতাতেই করতে হবে। অর্থাৎ এর আগে তাঁদের দিল্লীতে জেরার জন্য ডেকে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে যে অভিযোগ সুপ্রিম কোর্টে করেছিলেন অভিষেক, সেই অভিযোগকেই মান্যতা দিল শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, বেআইনি কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্তের সূত্রে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও তাঁর স্ত্রীকে বার বার দিল্লীতে জেরার জন্য তলব করছিল ইডি। কেন্দ্রীয় এজেন্সির সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে দিল্লী হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন অভিষেক ও রুজিরা। কিন্তু উচ্চ আদালত তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। এর পর সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করেন তাঁরা। এই মামলায় অভিষেকের আইনজীবী ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কপিল সিব্বল।
সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময়ে ইডি জানিয়েছিল, কলকাতায় জেরা করতে তাঁদের অসুবিধা রয়েছে। কারণ, আদালতও জানে যে কলকাতায় প্রভাবশালীদের জেরা করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সির অফিসারদের এর আগে কীভাবে হেনস্তা হতে হয়েছিল। অন্যদিকে, অভিষেকদের মামলার প্রধান যুক্তি ছিল, ইডি আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে বাংলার বেআইনি কয়লা পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লীতে ডেকে পাঠাচ্ছে। হেনস্থা করার উদ্দেশ্যেই আসলে কোনও ভৌগোলিক সীমানা মানা হচ্ছে না।
অভিষেকের মামলার যুক্তি ছিল, অভিষেকের দল কেন্দ্রের শাসক দলকে ভোটে গোহারা হারিয়েছে। তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে। কোথায় অপরাধ হয়েছে, কোথায় সমন পাঠানো ব্যক্তি থাকেন, তা না দেখেই দিল্লীতে সমন পাঠানো হচ্ছে। কলকাতায় চালু অফিস থাকা সত্বেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লীতে ডাকা হচ্ছে। মনে হচ্ছে, ইডি দ্রুত তদন্তের থেকে অভিষেক-রুজিরাকে হেনস্থা করতেই বেশি উৎসাহী।
দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পরেই মঙ্গলবার ইডিকে দেওয়া বিশেষ নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, অভিষেক এবং রুজিরাকে কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। শুধু তাই নয়। বিচারপতি ইউইউ ললিত এদিন ইডির উদ্দেশে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করতে হলে আপনাদের অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে।