ফের জল্পনায় পড়ল ঘৃতাহুতি। কয়েকদিন আগেই তৃণমূলের জয়ের পিছনে রাজ্য সরকারের একাধিক জনমুখী প্রকল্পের অবদান নিয়ে সওয়াল করেছিলেন বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এবার সেই তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’-এর প্রচার করলেন জিতেন্দ্রপত্নী তথা বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালী তিওয়ারি। আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করলেন তিনি। চৈতালী দেবীর এই টুইট ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। হঠাৎ করে তৃণমূল পরিচালিত সরকারের প্রকল্পের প্রচার করে কেন পোস্ট করলেন তিনি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
প্রসঙ্গত, সদ্য শেষ হওয়া আসানসোল পুরনিগমে বিজেপির প্রার্থী হিসাবে লড়াই করে জয় পেয়েছেন চৈতালি। পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী হিসেবে তাঁকেই নিবার্চন করা হয়েছে। চৈতালর টুইটে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “যাঁরা এই শিবিরের সুবিধা নিতে ইচ্ছুক, তাঁরা ওই দিন নির্দিষ্ট সময়ে শিবিরে পৌঁছে যান।” অর্থাৎ এককথায় রাজ্যসরকারের প্রকল্পের প্রচার করলেন তিনি। যদিও যে কার্ডটি প্রচারের স্বার্থে টুইটারে শেয়ার করা হয়েছে, সেই কার্ডে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জেপি নাড্ডার ছবি। প্রসঙ্গত, অমিত শাহের রাজ্য সফরের সময় তৃণমূল ত্যাগ করেন জিতেন্দ্র। বর্তমানে বিজেপি নেতা তিনি। এর আগে ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেছিলেন জিতেন্দ্র। তিনি লিখেছিলেন, “বাংলা জয় করতে চান, বাংলার মানুষের মন আগে বুঝতে হবে।” তার কয়েকদিন মধ্যেই মমতা সরকারের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প দুয়ারে সরকারের হয়ে কথা বলতে শোনা গেল জিতেন্দ্র-জায়াকে।
এবিষয়ে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “দুয়ারে সরকার প্রকল্প রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় ও জনমুখী প্রকল্প। বিজেপি কাউন্সিলর সেই প্রকল্পের শিবিরে প্রচার করছেন তা অভিনন্দনযোগ্য। কিন্তু সেখানে প্রধানমন্ত্রী ও জেপি নাড্ডার ছবি দেওয়া মানে ভুল বার্তা দেওয়া।” ঘটনা প্রসঙ্গে চৈতালি তিওয়ারির সাফাই, “২৩শে মে আমার ওয়ার্ডে দুয়ারে সরকারের শিবির। আমি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের ওই প্রকল্পের সুবিধা নিতে বলেছি। এর মধ্যে বিতর্কের কিছুই নেই।” তাঁর দাবি, “জনগণের করের টাকায় সরকার পরিষেবা দেয়। সেই জনগণের মধ্যে আসানসোল পুর এলাকার বিজেপি মনোভাবাপন্ন ২ কোটি ২৮ লক্ষ মানুষ রয়েছে। সরকারি প্রকল্পে তাঁদেরও অধিকার রয়েছে।”হআসানসোল পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী আরও বলেন, “এছাড়া রাজ্যের বেশিরভাগ প্রকল্পে কেন্দ্রের টাকা রয়েছে। তাই সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়ায় আপত্তির কিছু দেখছি না।” বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য বিবেকানন্দ ভট্টাচার্যের দাবি, “একান্ত ব্যক্তিগত মতামত জানিয়ে ওই টুইট করেছেন বিজেপি কাউন্সিলর। দল থেকে করতে বলা হয়নি। তবে ওঁর প্রতি আমাদের পরামর্শ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করুন।”