মঙ্গলবার ফের জেলাসফরে রওনা হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। ৩ দিনের এই সফরে দুই জেলাতেই প্রশাসনিক বৈঠক ও দলের কর্মীসভা করবেন তিনি। দুই জেলায় প্রশাসনিক কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি দলকে সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপও নিতে পারেন তৃণমূল সভানেত্রী। তাঁর এই সফরে তিনি বৈঠক করবেন দলের ব্লক স্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও। তবে এবারের সফরে রাজ্যের প্রথম সাইকেল তৈরির কারখানা নির্মাণের বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেতে চলেছে।
পাশাপাশি, নবান্ন সূত্র জানাচ্ছে, এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর শহর মেদিনীপুর টাউন থেকেই জেলার অন্যতম মহকুমা শহর খড়গপুরের বুকে একটি সাইকেল কারখানা স্থাপনের বিষয়টি জনসমক্ষে উপস্থাপন করবেন মমতা। এ রাজ্যেরই এক বিনিয়োগকারীর প্রস্তাব মেনে খড়গপুরেই সাইকেল কারখানা গড়ার ছাড়পত্র দিয়েছে নবান্ন। সেই কারখানা গড়ার জন্য জমিও চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। সেই কারখানা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা এদিন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রস্তাবিত এই কারখানায় প্রায় ৫ হাজার যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থান হওয়ার কথা। আগামী বছর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই কারখানার নির্মাণের বিষয়টি নিঃসন্দেহে গ্রামীণ এলাকায় তৃণমূলের প্রতি সমর্থনকে আরও দৃঢ় করে তুলবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পের হাত ধরে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছে সাইকেল। দেশের মধ্যে প্রথম বাড়িতে বাড়িতে সাইকেল থাকার দৌড়ে এগিয়ে বাংলাই।
উল্লেখ্য, তাঁর এই ৩ দিনের জেলা সফরে জঙ্গলমহলের জন্য একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে বার্তা দেবেন দলের কর্মী থেকে নেতা মায় জনপ্রতিনিধিদেরও। দুর্নীতি হোক বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা, তাতে জড়িত থাকলে যে কাউকে রেয়াত করা হবে না, সেই বার্তাই তুলে ধরবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, জেলা সফরে গিয়েও দুর্নীতি থেকে শুরু করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একাধিক ইস্যুতেই কড়া অবস্থান নেবেন মমতা। প্রয়োজনে, জেলা স্তরে বিভিন্ন পদে নিযুক্ত জনপ্রতিনিধিদের দলীয় পদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রেও রদবদলও করতে পারেন তিনি। এমনকী দলের সাংগঠনিক পদেও কিছু রদবদল আসতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা রয়েছে। দু’সপ্তাহ আগে জেলা শাসকদের সঙ্গে একটি বৈঠকে জঙ্গলমহলে মাওবাদী আতঙ্কের জন্য বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছিলেন মমতা। এবার জেলায় গিয়ে তা নিয়ে তিনি কী বার্তা দেন, সে দিকেও সকলের নজর থাকবে সকলের। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দলীয় কর্মীদের বৈঠকের সময় সূচীর কিছু পরিবর্তন হয়েছে। বিকেল ৩টের সময় বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও ১২টা থেকেই সেই বৈঠক শুরু হয়ে যাবে। এদিন বেলা সাড়ে এগারোটার মধ্যেই হেলিকপ্টারে করে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে পৌঁছে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় দেড় বছর আগে শেষবার মেদিনীপুরে এসেছিলেন তিনি। এবার তাঁর এই সফরে ১৩০টি নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৮৬টি প্রকল্পের শিলান্যাস করতে চলেছেন মমতা।
