একুশের ভোটযুদ্ধে বিজেপিকে রুখে দিয়ে বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে অন্যান্য রাজ্যে সংগঠন বিস্তার করে দলকে সর্বভারতীয় স্তরে মেলে ধরার চেষ্টা।লক্ষ্য একটাই। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দল বিজেপিকে হারিয়ে কেন্দ্রে সরকার গড়া। এরই মধ্যে এল চমকপ্রদ খবর। মোদীর কাশীতে এবার বঙ্গভবন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাশী বা বারাণসী যাওয়া হাজার হাজার বাঙালি পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই বাংলার রাজ্য সরকার এই পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানে কোচবিহার রাজাদের একটি সম্পত্তিও লিজ নিতে পারে রাজ্য সরকার। যা নিয়ে রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথাবার্তাও শুরু হয়ে গিয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, বারাণসীতে বঙ্গভবনের জন্য এক একরের সামান্য কম একটি জমি ইতিমধ্যেই চিহ্নিতও করে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ওই জমিটি বারাণসী শহরের মধ্যে ও বিশ্বনাথ মন্দির থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বারাণসীতে সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচার করতে গিয়েছিলেন মমতা। সেই সময়েই তিনি ওই জমি দেখে এসেছিলেন। জায়গাটি তাঁর পছন্দও হয়। তারপরেই জমিটি কিনে সেখানে বঙ্গভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন শুরু হয়েছে সেই বঙ্গভবনের নকশা চূড়ান্ত করার কাজ। খুব শীঘ্রই তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। গত শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বারাণসীতে প্রস্তাবিত বঙ্গভবন নিয়ে পূর্ত দফতরের সঙ্গে একটি বৈঠকও করেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানে তিনি প্রকল্পের অগ্রগতি জানতে চান।
এর পাশাপাশি বারাণসীতে বাঙালিটোলার কাছে সোনারপুরা রোডের ওপরে থাকা কোচবিহার রাজাদের প্রাসাদ- ‘হাওয়া মহল’ লিজ নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। কোচবিহারের ১৭তম মহারাজ হরেন্দ্রনারায়ণ তাঁর শেষ জীবনে কাশীবাসের জন্য কাশীর রাজার কাছ থেকে একটি জমি কিনেছিলেন। সেই জমিতেই শুরু হয়েছিল ‘হাওয়া মহল’ নির্মাণের কাজ। কিন্তু সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই মারা যান মহারাজ হরেন্দ্রনারায়ণ। পরে সেই অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করেন তাঁর ছেলে তথা কোচবিহারের ১৮তম মহারাজ শিবেন্দ্রনারায়ণ। ওই প্রাসাদ চত্বরেই এক একরের কম একটি ফাঁকা জায়গা রয়েছে। মমতার প্রস্তাব অনুযায়ী, ওই ফাঁকা জমিতেই প্রাথমিক ভাবে পাঁচতলা বঙ্গভবন তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য পূর্ত দফতরের। পাশাপাশি, হেরিটেজ বা ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখে হাওয়া মহলের সংস্কার ও সংরক্ষণের কথাও ভাবা হচ্ছে।