এগিয়ে বাংলা। এবার গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্প ‘জল স্বপ্ন’ রূপায়িত করার ক্ষেত্রে নতুন পালক জুড়ে গেল বাংলার সাফল্যের মুকুটে। কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই প্রকল্পে গোটা দেশের গ্রামীণ এলাকায় যে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে, তাতে সবচেয়ে বেশি পরিস্রুত জল সরবরাহ করছে বাংলা। মন্ত্রকের বিধি অনুযায়ী, যে রাজ্যে রয়েছে জল পরীক্ষার সবচেয়ে বেশি ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরি (এনএবিএল), সেই রাজ্যের পানীয় জলই সবচেয়ে পরিস্রুত বলে ধরা হয়। এই নিরিখে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১১টি এনএবিএল সম্বলিত রাজ্য বাংলা।
উল্লেখ্য, মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে বিজেপিশাসিত গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক, অসম, হিমাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলি অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলিতে বারবার বাংলা তার দক্ষতা প্রমাণ করা সত্ত্বেও, কেন্দ্রের বঞ্চনা কমছে না। ১০০ দিনের কাজের মজুরি প্রদান এবং গ্রামীণ আবাসন প্রকল্পে নির্মাণ লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের সেই বঞ্চনা প্রতিষ্ঠিত। পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের (পিএইচই) এহেন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিনন্দন জানিয়েছেন বিভাগীয় মন্ত্রী পুলক রায় এবং আধিকারিকদের। ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রের এহেন বঞ্চনা সত্ত্বেও পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলা যে বদ্ধপরিকর, মন্ত্রকের পরিসংখ্যানই তা প্রমাণ করছে। আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই রাজ্যের সব গ্রামীণ এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার মোট ৪০ লক্ষ ৩,৯৯৬টি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছে পিএইচই।
পাশাপাশি, পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে, পানীয় জল সরবরাহ করার আগে তার নমুনা এনএবিএল-কে পাঠাতে হয়। এনএবিএল-এর শংসাপত্র মিললে, তবেই পানীয় জলকে পরিস্রুত বলে ধরা হয়। বাংলায় পানীয় জল নমুনা পরীক্ষার জন্য মোট ২২১টি পরীক্ষাগার রয়েছে। তার মধ্যে ১১১টি এনএবিএল। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, আরও পাঁচটি নমুনা পরীক্ষার এনএবিএল-এর স্বীকূতি পেয়েছে। সেই তথ্য মন্ত্রকে পাঠানো হচ্ছে। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, গোটা দেশে জিও ট্যাগ দেওয়া মোট ৫০৪টি নমুনা পরীক্ষাগার রয়েছে। তারমধ্যে ১১১টি পরীক্ষাগার শুধুমাত্র বাংলার। জলশক্তি মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, আয়তন ও জনসংখ্যায় দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে এনএবিএল রয়েছে ২৫টি। গুজরাতে এই সংখ্যা ৭১। হরিয়ানা, কর্ণাটক, হিমাচলপ্রদেশ এবং বিহার সংখ্যাটি হল যথাক্রমে ২৯, ২৩, ৫২ এবং ৭। গেরুয়া শিবিরের অপর রাজ্য অসমে এনএবিএল-এর সংখ্যা মাত্র ৫।