প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদল নিয়ে বারবার বাংলাকে আক্রমণ করেছে বিজেপি নেতারা। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতেই উলটপুরাণ। তাঁরাও দিব্যি নাম বদল করে চালাচ্ছে এই প্রকল্প।
গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ডবল ইঞ্জিনের রাজ্য উত্তরপ্রদেশে এই প্রকল্পের নাম ‘মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা’। এমনকী স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্রে এটি ‘বারাণসী মুখ্যমন্ত্রী আবাস যোজনা’ হিসেবে পরিচিত। একইভাবে মধ্যপ্রদেশ ও বিহারে গ্রামীণ আবাস যোজনার আগে প্রধানমন্ত্রীর বদলে বসানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী শব্দটি। মোদি-শাহের রাজ্যে এই প্রকল্পের নাম ২০১৪ সাল থেকেই ‘মুখ্যমন্ত্রী গুজরাত রুরাল-আরবান হাউজিং যোজনা’। বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে আবার এর নতুন পরিচয় হয়েছে ‘বাসব বসতি যোজনা’। অথচ এ রাজ্যে ‘বাংলা’ নামটি জোড়ায় কেন এত আপত্তি আর বঞ্চনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট সব মহল।
নাম বদলানোর এই প্রবণতা অবশ্য শুরু হয়েছে কেন্দ্রের দিক থেকেই। ১৯৮৫ সালে শুরু হওয়া ‘ইন্দিরা আবাস যোজনা’ ২০১৫’এ পাল্টে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ করেছিল মোদী সরকারই। তা নিয়ে অবশ্য কোনও আপত্তি ওঠেনি। এখন সেই নাম বদলকেই বরাদ্দ বন্ধে অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। গ্রামীণ আবাস যোজনায় বাংলার উজ্জ্বল অবস্থান সত্ত্বেও কেন্দ্রের এই অবস্থান যে বঞ্চনাকেই প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেকথা বারবার বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আঞ্চলিক ভাষা আর সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিতেই যে প্রকল্পের নামে বাংলা শব্দটি জোড়া হয়েছে, সে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
এই বঞ্চনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন তিনি। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরির সঙ্গেই আবাস যোজনা প্রকল্পের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘২০১৬-১৭ আর্থিক বছর থেকে আবাস প্রকল্পে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে থেকে ৩২ লাখেরও বেশি গৃহনির্মাণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এই সাফল্য সত্ত্বেও নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ এবং অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। দুর্ভোগে পড়েছেন আবাস প্রকল্পের অপেক্ষায় থাকা উপভোক্তারা।’