এবার প্রসবের পরে সদ্যোজাত ও প্রসূতির মৃত্যুর আশঙ্কা কমাতে রাজ্যের সব হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে পোস্টপার্টাম কেয়ার ইউনিট চালু । প্রসবের পর সদ্যোজাত এবং প্রসূতিকে অন্তত ১২ ঘণ্টা পোস্টপার্টাম কেয়ার ইউনিটে রাখতে হবে। পোস্টপার্টাম কেয়ার ইউনিটে প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়া এবং বের করে আনার সমস্ত তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। প্রসূতি মৃত্যু কমাতে এমনই সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের। প্রসবের পর বিভিন্ন কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে সেপসিস তো বটেই, নিয়ন্ত্রণ না হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে প্রসূতির। এমন ঘটনা যে শুধুমাত্র সিজারের জন্য হবে তা নয়। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, স্বাভাবিকভাবে শিশুর জন্মের পরেও এমন ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন হাসপাতালে এমন ঘটনা বারবার ঘটায় রীতিমতো চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা। তাই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে কোমর বেঁধে নেমেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। সব সরকারি হাসপাতালে পোস্টপার্টাম এই ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল স্বাস্থ্যদফতর।
প্রসঙ্গত, মেডিক্যাল কলেজ তো বটেই সমস্ত জেলা, ব্লক এমনকি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেও এই পোস্টপার্টাম কেয়ার ইউনিট চালু করতে হবে। শুধুমাত্র চালু করলেই হবে না। সেগুলিতে স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ থাকতেই হবে। স্বাস্থ্যদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে প্রসূতি মৃত্যু কমাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। প্রথমত, পোস্টমার্টাম কেয়ার ইউনিটে অন্তত নার্সিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি প্রাপ্ত ৮ জন করে নার্স থাকতে হবে। প্রতি শিফটে অন্তত ২ জন করে নার্সকে থাকতে হবে। প্রতিটি পোস্টপার্টাম কেয়ার ইউনিটের কাছে একটি পৃথক ওয়ার্ড থাকবে। ১২ ঘণ্টা পোস্টপার্টাম ওয়ার্ডে পর্যবেক্ষণে রাখার পর ওই ওয়ার্ডে আরও কিছুক্ষণ প্রসূতি ও সদ্যোজাতকে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রসূতি মৃত্যু কমাতে দু’সপ্তাহ আগে একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় স্বাস্থ্যদপ্তর। বলা হয়, হাই ব্লাড প্রেসার প্রসূতির মৃত্যুর অন্যতম কারণ। রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজে সমীক্ষা করে এমন তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্যভবন। আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যে প্রসূতি মৃত্যুর হার একশোর নিচে নামাতে বদ্ধপরিকর রাজ্য। ‘হাইরিস্ক গ্রুপ’ প্রসূতিদের সরকারি হাসপাতালে ভরতি করে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির আওতায় আনার পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে রাজ্য। স্বাস্থ্যভবনের তথ্য অনুযায়ী, প্রসূতির মৃত্যু কমাতে মূলত চারটি বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। প্রথমত, হাইরিস্ক গ্রুপের প্রসূতিদের চিহ্নিত করতে হবে। অর্থাৎ যেসব প্রসূতির উচ্চ রক্তচাপ বা অন্য কোনও উপসর্গ রয়েছে শুরু থেকেই তাঁদের সরকারি হাসপাতালে বিশেষ নজরদারির মধ্যে রাখা হবে। দ্বিতীয়ত, প্রাথমিক ও ব্লক হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো ব্যবহার করে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবহার আরও বাড়াতে হবে।