এখানের অধ্যক্ষ থেকে চিকিৎসকেরা ‘আসি যাই মাইনে পাই তে’ বিশ্বাসী। সপ্তাহে তিনদিনের বেশি তাঁরা হাসপাতালে ডিউটি করেন না। বরং বেসরকারি নাসিংহোমে সময় কাটান। এই কর্মসংস্কৃতি আর চলতে দেওয়া যাবে না।’ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবার এভাবেই সরব হলেন রাজ্য বিধানসভার স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাজি। শুধু তাই নয়। তাঁর আরও অভিযোগ, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অন্তত দশ শতাংশ চিকিৎসক এখনও ‘সিপিএমের হার্মাদ’ হয়ে রয়েছেন। পরিষেবা বিঘ্নিত করে সরকারের বদনাম করছেন তাঁরাই। তাঁদের চিহ্নিত করে বিধানসভায় শোকজ করা হবে বলে সতর্ক করেছেন নির্মল। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং মেডিক্যাল সুপারের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
নির্মল মাজির কথায়, ‘মালদহ মেডিক্যাল কলেজ প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হয়। এতবড় একটা মেডিক্যাল কলেজ, যেখানে অত্যাধুনিক মানের চিকিৎসা করা হয়। মাতৃমা থেকে ট্রমা কেয়ার, এমআরআই, কলেজের অডিটোরিয়াম-সহ হোস্টেলের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এখানে একটা বড় সমস্যা রয়েছে। রাজ্য সরকার বিনে পয়সায় চিকিৎসা পরিসেবা চালু করেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু পরিষেবা পাচ্ছেন না অসুস্থ রোগীরা। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ থেকে চিকিৎসকেরা ‘আসি যাই মাইনে পাই তে’ বিশ্বাসী। সপ্তাহে তিনদিনের বেশি তাঁরা হাসপাতালে ডিউটি করেন না। বরং বেসরকারি নাসিংহোমে সময় কাটান। এই পরিকল্পনাকে পালটাতে হবে।’
তাঁর অভিযোগ, মালদহ মেডিক্যালে প্রিন্সিপাল, সুপাররা তিনদিনের বেশি যান না। সিপিএমের ‘হার্মাদ’ কিছু ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের চিকিৎসকরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে বসে আছেন। তাঁরা পরভূমে রয়েছেন। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘এই সমস্ত ডাক্তারদের আমরা চিহ্নিত করে বিধানসভায় শোকজ করব। এখানে হাসপাতালে ৬ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, যাঁরা আট ঘণ্টার বাইরে ডিউটি করেন না, যাঁরা হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিংহোমে ডিউটি করছেন। সপ্তাহে পাঁচ দিন তাঁরা আসছেন না। প্রিন্সিপাল হোক বা কোনও ডিপার্টমেন্টের প্রধান হোক, যে কোনও বিভাগের ডাক্তার হোক না কেন, জনগণ তাদের ক্ষমা করবেন না…আপনারা সপ্তাহে দু’দিন ডিউটি করে মাসে দেড় লক্ষ টাকা বেতন নিচ্ছেন। কলকাতায় গিয়ে আবার চিকিৎসা করছেন। কাজ করবেন না অথচ সরকারের কাছ থেকে কাছ থেকে মোটা টাকা নেবেন, তারপর আবার কলকাতাতে চারদিন প্র্যাকটিস করবেন, এই জিনিস বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবেন না।’
