স্বস্তি দূর অস্ত। শেষমেষ মিলল নিখাদ হতাশা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হলেই তাঁরাও ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। এই আশাতেই পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে এসেছিলেন প্রায় ৮০০ হিন্দু । প্রথমিকভাবে রাজস্থানে ঘাঁটি গেড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, তাঁদের সেই আশা অপূর্ণই থেকে গিয়েছে। গত বছর ফের পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন এই পাকিস্তানি সংখ্যালঘুরা। এমনটাই দাবি করেছে ‘শ্রীমন্ত লোক সংগঠন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান।
শ্রীমন্ত লোক সংগঠন আসলে একটি অলাভজনক সংস্থা। যারা মূলত পাকিস্তান থেকে ভারতে আসা সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে আইনি লড়াই লড়ে। এই সংগঠনের সদস্যরা পেশাদার আইনজীবী। তাঁদের দাবি, সিএএ ভারতে কার্যকর হওয়ায় আশার আলো দেখেছিলেন পাকিস্তানি সংখ্যালঘুরা। তাঁদের মধ্যে হিন্দুরা অন্যতম। শরণার্থী হিসেবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার পর তাঁরা এদেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু, আপাতত সেই প্রক্রিয়া বিশ বাঁও জলে। তাই, উপায়ন্তর না পেয়েই ফের পাকিস্তানে ফিরে যান তাঁরা।
এপ্রসঙ্গে শ্রীমন্ত লোক সংগঠনের সভাপতি হিন্দু সিং সোধার দাবি, ভারতে ঠাঁই না পেয়ে পাকিস্তানে ফিরে যেতেই ওই পাকিস্তানি হিন্দুদের জীবন আরও দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। সোধা বলেন, “ওঁরা যেই ফিরেছেন, পাকিস্তানি বিভিন্ন সরকারি সংস্থা ভারতের সম্মানহানি করতে ওঁদের ব্যবহার করতে শুরু করছে। পাক সংবাদমাধ্যমের সামনে ওঁদের দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ওই পাকিস্তানি সংখ্যালঘুদের সঙ্গে নাকি ভারতে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।”
তথ্যানুযায়ী, বিগত ২০১৮ সাল থেকে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী দেশের নির্বাচিত সংখ্যালঘুদের কাছ থেকে অনলাইনে নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে আবেদনপত্র গ্রহণের কাজ শুরু করে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এর জন্য ভারতের সাতটি রাজ্যের ১৬ জন কালেক্টরকে বিশেষ দায়িত্বও দেওয়া হয়। তাঁদের বলা হয়, সংশ্লিষ্ট প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে আসা হিন্দু, ক্রিস্টান, শিখ, পার্সি, জৈন এবং বৌদ্ধরা অনলাইনে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পাঁচটি রাজ্যের (গুজরাত, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, হরিয়ানা এবং পঞ্জাব) আর ১৩ জন জেলাশাসককেও একই নির্দেশ পাঠানো হয়। তাতে বলা হয়, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুসারে সংশ্লিষ্ট ছয়টি সম্প্রদায়ের বিদেশি সংখ্যালঘুদের আবেদন গ্রহণ করে তাঁদের নাগরিকত্বের শংসাপত্র প্রদান করতে হবে।