১৯৪৮-এর ৩০ জানুয়ারি দিল্লীর বিড়লা হাউসে প্রার্থনারত মহাত্না গান্ধীকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন নাথুরাম গডসে। এবার তাদের ইতিহাস বইয়ে জাতির জনকের হত্যাকারীর পরিচয় থেকে ‘পুণের ব্রাহ্মণ’ শব্দ দুটি বাদ দিল কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা এনসিইআরটি।
প্রসঙ্গত, সরকারি-বেসরকারি সব রচনা বইয়ে মহৎ এবং অসাধু সব ধরনের চরিত্রের ক্ষেত্রেই রচনায় জাত পরিচয়ের উল্লেখ আছে। কারণ, নিম্ন জাতের মানুষ হওয়ার কারণে অনেক মহৎ ব্যক্তির জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে বিস্তর বাধা বিপত্তি পেরতে হয়েছে। অন্যদিকে, এদেশের সমাজ ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণরা উচ্চবর্ণ বলে স্বীকৃতি পেয়ে এসেছে এবং সেই সুবাদে বাড়তি সুবিধা ভোগ করেছে দীর্ঘ সময় ধরে। মনে করা হচ্ছে, ওই সমাজের আপত্তিতেই গান্ধীর হত্যাকারীর মতো কুখ্যাত মানুষ গডসের ব্রাহ্মণ পরিচয় বাদ দেওয়া হল।
উল্লেখ্য, দুদিন আগেই এনসিইআরটি সিবিএসই দশমের পাঠ্যক্রম থেকে ফৈজ আহমেদ ফৈজয়ের কবিতা বাদ দিয়ে দিয়েছে। বাদ দিয়েছে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ক অংশ এবং ঠান্ডা যুদ্ধের সময়ে ভারতের জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রসঙ্গ। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু, পরে ইন্দিরা গান্ধী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব দরবারে ভারতের প্রভাব ও সম্মান বাড়িয়েছিলেন। শুধু ভারত নয়, বহু দেশেই জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সূচনা ও গুরুত্ব স্কুল-কলেজে পড়ানো হয়।
এনসিইআরটি কেন সিলেবাস থেকে এ হেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছেঁটে দিচ্ছে? তারা সাফাই গেয়ে জানিয়েছে, করোনা পরবর্তী সময়ে পড়ুয়াদের উপর সিলেবাসের বোঝা কমাতেই এই উদ্যোগ। সেই কাজ করতে গিয়ে কেন গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দেওয়া হচ্ছে তা নিয়ে নানা মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। গডসের ব্রাহ্মণ পরিচয় মুছে দেওয়ার কারণ হিসাবে তাদের দাবি, বহু মানুষ জাত পরিচয় নিয়ে আপত্তি তুলেছে। তাই এই সিদ্ধান্ত।