দলের রাজ্য কমিটির মাথায় সুকান্ত মজুমদার থাকলেও আসলে যে নিচুতলায় যে তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, তা নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তনের বক্তব্য যে সঠিক তা সমর্থন করেই ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় গেরুয়া শিবিরে প্রকাশ্যেই বিদ্রোহ শুরু হয়ে গিয়েছে। আদি বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করে বাংলায় দলটাকে ‘আউটসোর্স’ করে প্রাক্তন আলিমুদ্দিনপন্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছে মুরলীধর সেন লেনের ক্ষমতাশালী গোষ্ঠী।
উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ, নতুন বিজেপি কমিটির একটা বড় অংশই যে দলবদলুরাই দায়িত্বে এসেছেন তা তথ্য তুলে অভিযোগ করেছেন বিদ্রোহী নেতারা। তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ, সুপরিকল্পিতভাবে বিজেপি দলটাকে অতি সন্তর্পণে দখল করে নিচ্ছে প্রাক্তন সিপিএম নেতারা। যাঁদের গায়ে একসময় স্থানীয় বাসিন্দারা ‘হার্মাদ’ তকমা লাগিয়ে দিয়েছিল। স্বভাবতই এই সমস্ত প্রাক্তন লালপার্টির দাপুটে নেতারা গেরুয়া শিবিরের দখল নেওয়ায় সাধারণ মানুষ পদ্ম থেকে সরে যাচ্ছেন, দল গোহারা হচ্ছে।
সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটিতে পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি জেলা সভাপতি পদে যাওয়া তপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ছিলেন। প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষের অনুগামী পশ্চিম মেদিনীপুরের অশ্বিনী জানা ও মোহনলাল শী, দু’জনেই একদা জেলার পরিচিত ও প্রভাবশালী সিপিএম নেতা ছিলেন, এখন দু’জনেই জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি। পূর্ব মেদিনীপুরের স্বপন রায়ও সিপিএম থেকে গেরুয়া শিবিরে এসে গেরুয়া দলের জেলা সহ-সভাপতি হলেন। নন্দকুমারের জোনাল সম্পাদক ছিলেন জীমূত মাইতির সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছোটভাই সৌমেন্দুও জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। কেশপুর জোনাল কমিটির দাপুটে নেতা তন্ময় ঘোষ এখন দারুণ মেজাজে এলাকায় বিজেপি চালাচ্ছেন। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যও গোটা পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন পদ্মশিবিরে পরিচিত ও প্রভাবশালী নেত্রী। বামফ্রন্ট সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী মহেশ্বর মুর্মুর পুত্র বিনোদ মুর্মুই এখন বকলমে কেশিয়ারি বিজেপি চালাচ্ছেন।