মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ। চলতি মাসে দেশে বস্তা প্রতি ২৫ থেকে ৫০ টাকা অবধি বাড়তে পারে সিমেন্টের দাম। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের কারণে ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের বোঝা খানিকটা হলেও হালকা করতে এই পন্থাই নিচ্ছে সিমেন্ট প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি। এর জেরে যে মানুষের বাড়ি নির্মাণ আগের চেয়ে আরও অনেক বেশি ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে তা বলাই বাহুল্য। রেটিং এজেন্সি ক্রিসিল সূত্রে খবর, গত এক বছরে সিমেন্টের দাম বেড়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯০ টাকা প্রতি বস্তা। এবার এই দাম পৌঁছাতে পারে ৪১৫ থেকে ৪৩৫ টাকায়।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, মার্চ মাসে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১১৫ ডলার অতিক্রম করেছে। এছাড়া বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দামও বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ইন্দোনেশিয়ার কয়লা রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধান খনিগুলিতে তাপমাত্রা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে সিমেন্টের চাহিদা বেড়েছে। ফলে জ্বালানির পাশাপাশি বেড়েছে পরিবহন খরচও। যেহেতু সিমেন্টের প্রায় ৫০%ই রাস্তা দিয়ে রপ্তানি বা পরিবহন করা হয় তাই এই পরিবহন খরচ বৃদ্ধি মারাত্মক সমস্যার মুখে দাঁড় করিয়েছে সিমেন্ট শিল্পকে।
ক্রিসিলের দাবি, ২০২১-২০২২ আর্থিক বছরের প্রথমার্ধে, সিমেন্টের চাহিদা বার্ষিক ভিত্তিতে ২০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে অকাল বৃষ্টির কারণে সিমেন্টের চাহিদার পাশাপাশি ঘাটতি দেখা দেয় বালি ও শ্রমিকেরও। সিমেন্ট কোম্পানিগুলো দাবি অনুয়ায়ী, গত ২-৩ মাসে সিমেন্ট তৈরির খরচ বেড়েছে ৭০-৭৫ টাকা। এ অবস্থায় আগের দামে সিমেন্ট বিক্রি করা কার্যতই অসম্ভব হয়ে পড়ছে তাদের জন্য।
শুধু সিমেন্টই নয়, বেড়েছে বাড়ি তৈরির অন্যান্য জিনিসের দামও। বাড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত রড, ইট ও টাইলসেরও এরই মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সব মিলিয়ে বাড়ি তৈরির খরচ বেড়েছে প্রায় ১৫-২০%। এমন পরিস্থিতিতে সিমেন্টের দাম বাড়ায় খরচ আরও বাড়বে। ডিসেম্বর থেকে লোহার দাম প্রতি টন ২০ হাজার টাকা বেড়েছে। ২০২১ সালের মার্চের তুলনায় ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে সিমেন্টের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০%। সব মিলিয়ে এবার যে অধরাই থেকে যাবে মধ্যবিত্তের স্বপ্ননীড়ের স্বপ্ন, তেমনটাই আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের।