মাছে ভাতে বাঙালির অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে। সেই কবে বিভূতিভূষণ বাঙালির দুর্নাম কাটাতে শংকরের মতো চরিত্র তৈরি করেছিলেন। আফ্রিকার জঙ্গলে গিয়ে ততটা অ্যাডভেঞ্চার না করলেও মাসাইমারায় জঙ্গল সাফারি করার স্বপ্ন কিন্তু বাঙালি দেখছে। আর এই সাফারি যদি আরও আর্কষণীয় করে এই রাজ্যে গড়ে তোলা যায় তাহলে তবে সোনায় সোহাগা।
উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে হোক বা সুন্দরবনে। এই সাফারি টেকনোলজির পাঠ নিতে চায় রাজ্য সরকার। আর এই কাজে রাজ্যকে সাহায্য করতে প্রস্তুত কেনিয়া। বিশ্ব বাংলা শিল্প সম্মেলনে সহযোগী দেশ বা পার্টনার কান্ট্রি হিসাবে এসেছে কেনিয়া। তারাই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বিষয়ে কথা বলেন কেনিয়ার প্রতিনিধির সঙ্গে। রাজ্য মনে করছে এটি চালু হলে রাজ্যে আরও বাড়বে পর্যটকদের সংখ্যা। তেমনি এই ক্ষেত্রেও বাড়বে আরও বিনিয়োগ সম্ভাবনা৷ তথ্য বলছে করোনার আগে ২০১৮ সালে ভারতে পর্যটনশিল্পে ৬ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে।
দেশের জিডিপিতে এর অবদান ৯.২ শতাংশ। এই বৃদ্ধিটা অব্যাহত থাকবে বলে বিশেষজ্ঞ মহলের মত। এফআইসিসিআই-ইয়েস ব্যাঙ্কের একটি রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর ৬.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৯-এ পর্যটনশিল্প ৩৫ লক্ষ কোটি টাকার বাণিজ্য করবে। এর একটা উল্লেখযোগ্য অংশ আসবে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজম থেকে। পর্যটকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়াতে সরকারি-বেসরকারি পর্যটন সংস্থাগুলো ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে নানা অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের আয়োজন করছে, যেমন প্যারাগ্লাইডিং, স্কুবা ড্রাইভিং, মাউন্টেনিয়ারিং, আরও নানা কিছু। এ ছাড়াও অ্যাডভেঞ্চারের জন্য নতুন নতুন স্পট তৈরি হচ্ছে। ফলে আগ্রহ বাড়ছে অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমে।অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের টানটান উত্তেজনার খোরাক দিতে প্রস্তুত বেঙ্গল সাফারি পার্ক।
বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন থেকেই শিলিগুড়ির এই সাফারি পার্কে শুরু হয়েছে দু’টি নতুন অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস— জিপলাইনিং এবং বার্মা ব্রিজ। গত মাসেই শিলিগুড়ির সালুগাড়ার বেঙ্গল সাফারি পার্ক পরিচয় বদলে অ্যাডভেঞ্চার পার্ক হয়েছে। এখন সেখানে বন্য প্রাণী এবং পাখির দেখা পাওয়ার পাশাপাশি পর্যটকরা অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্পের সুযোগ নিতে পারবেন। পার্কের ডিরেক্টর দাওয়া সাংমু শেরপা আগেই জানিয়েছিলেন, পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ধীরে ধীরে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা করা হবে পার্কে। সেই মতো ১৫ এপ্রিল থেকেই শুরু হয়েছে জিপলাইনিং এবং বার্মা ব্রিজ অ্যাডভেঞ্চার অ্যাক্টিভিটি।